সৌদি আরবের একটি উচ্চ আদালত সে দেশের ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের যে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেছে, তাকে ‘বিচারের নামে প্রহসন’ বলে অভিহিত করেছেন জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি অ্যাগনেস ক্যালামার্ড। আলজাজিরা ও পার্সটুডের খবরে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার আদালতের রায় ঘোষিত হওয়ার পর ক্যালামার্ড বলেন, ‘যে প্রক্রিয়ায় এ বিচার অনুষ্ঠিত হয়েছে, তা ন্যায়বিচার ও স্বচ্ছতার পরিপন্থী।’ ২০১৮ সালের অক্টোবরে খাসোগি নিহত হওয়ার পর এ ব্যাপারে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করার দায়িত্ব পেয়েছিলেন ক্যালামার্ড। তিনি আরো বলেন, ‘দণ্ডপ্রাপ্তদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি এবং কী কারণে খাসোগির পরিবার তাঁর হত্যাকারীদের ক্ষমা করে দিল, তা স্পষ্ট নয়।’
জামাল খাসোগির তুর্কি বাগদত্তা খাদিজা চেঙ্গিসও সৌদি আদালতের রায়কে ‘হাস্যকর’ বলে অভিহিত করেছেন। খাদিজাকে বিয়ে করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে ঢুকে আর প্রাণ নিয়ে ফিরতে পারেননি খাসোগি।
সৌদি আরবের একটি উচ্চ আদালত সোমবার সে দেশের ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যা করার দায়ে পাঁচ ব্যক্তির ফাঁসির দণ্ড লঘু করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। গত বছর ওই পাঁচ ব্যক্তিকে একটি নিম্ন আদালত ফাঁসির আদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু খাসোগির পরিবার হত্যাকারীদের ‘ক্ষমা’ করে দেওয়ার পর আদালত তাঁদের দণ্ড কমিয়ে দেয়।
প্রায় দুই বছর আগে তুরস্কের ইস্তাম্বুল নগরীতে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে জামাল খাসোগি নির্মমভাবে নিহত হন। সে সময় তুর্কি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের প্রত্যক্ষ মদদে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে।
এ ছাড়া জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি অ্যাগনেস ক্যালামার্ড তাঁর এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে খাসোগি হত্যার ঘটনাকে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ বলে অভিহিত করেন। তিনি এ ঘটনায় যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের জড়িত থাকার অভিযোগ সম্পর্কে অধিকতর তদন্তেরও দাবি জানিয়েছিলেন।
খুলনা গেজেট / এমএম