বাগেরহাটের রামপালে স্থানীয় বিপদাপন্নতা ও যুব ভাবনা বিষয়ক জলবায়ু সম্মেলনে স্বেচ্ছাসেবকদের আয়োজনে সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী প্রদর্শনী এবং মানুষের দুঃখের কথা বর্ণনা করা হয়।সোমবার রামপাল উপজেলা অডিটরিয়ামে তরুণদের উত্থাপিত প্রশ্ন ও যুক্তির উত্তর দেন পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার ও বিভিন্ন দপ্তরের সরকারী কর্মকর্তারা। উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে স্থানীয় বিপদাপন্ন মানুষের কথা বলতে যেয়ে স্বেচ্ছাসেবক ঈশীতা দে বলেন, অতিরিক্ত লবনাক্ততা’র ফলে আমাদের এখানে ধানের উতপাদন কমে গেছে। আগে জমি থেকেই মানুষের বছরের ধান হয়ে যেত। কিন্তু বর্তমানে লবণ পানি আগের চেয়ে বেড়ে যাওয়ায় কেউ-ই ভালো ভাবে ধান চাষ করতে পারছেন না। লবণ পানির কারণে কোনো রবি শষ্যও চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না।
সামিয়া ইসলাম বলেন, গরম আসলেই তীব্র পানির সংকটে ভুগি আমরা। প্রচন্ড গরমের কারনে পুকুরের পানি শুকিয়ে গেছে। আশে-পাশের খালে লবণাক্ত পানি। বাধ্য হয়ে লবণ পানিতে গোসল রান্না ও খাওয়ার কাজে ব্যবহার করতে হয়। আবার বৃষ্টির সময় অতি বৃষ্টি। সব মিলিয়ে আমরা আছি বিপদে।
আলিমুজ্জামান আলিম বলেন, আমরা বিদ্যুৎ এর বিপরীতে সোলার প্যানেল ব্যবহার করতে পারি, যা পরিবেশবান্ধব। এতে পরিবেশে তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। এছাড়া বাগেরহাটে জলবায়ু ফান্ডের বাজেট বাড়াতে হবে বলে দাবী করেন তরুণ এই স্বেচ্ছাসেবকরা।
এ্যাক্টিভিস্টা রামপাল, বাঁধন মানব উন্নয়ন সংস্থা এবং একশন এইড বাংলাদেশের সহযোগিতায় জলবায়ু সম্মেলনে পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, রামপাল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মোয়াজ্জেম হোসেনের, রামপাল থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম আশরাফুল আলম, বাঁধন মানব উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক এএসএম মঞ্জুরুল হাসান, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ ইমরান হোসেন, রামপাল উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি হাওলাদার আঃ হাদী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হোসনেয়ারা মিলি, বাঁধন এফোরটি প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী মুশফিকুল ইসলাম রিতুসহ সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, রামপাল উপজেলার দেড় শতাধিক যুব প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
জলবায়ু প্রভাব মোকাবেলায় চেষ্টার ত্রুটি নেই জানিয়ে উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, মানুষ নিজেই নিজের ক্ষতি ডেকে আনছে। খনন করে ছেড়ে দেওয়া খাল আবার প্রভাবশালীরা দখল করছে। নিজেরা সচেতন না হলে শুধু আইন দিয়ে তো ঝুঁকি কমানো সম্ভব নয়। এছাড়া সম্ভাব্য পরিবেশ বিপর্যয় সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি, জীবন-জীবিকার মান উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সুপেয় পানির সংকট নিরসনে গভীর নলকূপ স্থাপন, পুকুর খনন, রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং স্থাপন করা হচ্ছে।টেকসই পরিবেশ নিশ্চিতকরণের জন্য অনেক উদ্যেগ বাস্তবায়নের পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্যও নানা পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
খুলনা গেজেট/কেডি