বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা দুই মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ৩ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আদালত। ‘ভুয়া’ জন্মদিন উদযাপন এবং মুক্তিযুদ্ধকে ‘কলঙ্কিত’ করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে করা মানহানি সংক্রান্ত দুই মামলার অভিযোগ গঠনের জন্য নতুন এ দিন ধার্য করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম (এসিএমএম) আসাদুজ্জামান নুরের আদালতে দুই মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় তার পক্ষে সময়ের আবেদন করেন আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার। আবেদন মঞ্জুর করে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আদালত নতুন দিন ধার্য করেন।
মুক্তিযুদ্ধকে ‘কলঙ্কিত’ করার অভিযোগে করা মামলায় বলা হয়, ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের সঙ্গে জোট করে নির্বাচিত হয়ে সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তিনি (খালেদা জিয়া) রাজাকার-আলবদর নেতাকর্মীদের মন্ত্রী-এমপি বানিয়ে তাদের বাড়ি-গাড়িতে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র ও জাতীয় পতাকা তুলে দেন।
২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির এই মামলা দায়ের করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী। আদালত বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।
পরের বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁও থানার পুলিশ পরিদর্শক মশিউর রহমান (তদন্ত) অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদন দেন। মামলার অন্য আসামি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মৃত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
ভুয়া জন্মদিন উদযাপন সংক্রান্ত মামলার অভিযোগে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একাধিক জন্মদিন নিয়ে ১৯৯৭ সালে দুটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এসএসসি পরীক্ষার মার্কশিট অনুযায়ী জন্ম তারিখ ১৯৪৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর।
১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে একটি দৈনিকে তার জীবনী নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জন্মদিন ১৯৪৫ সালের ১৯ আগস্ট লেখা হয়। বিয়ের কাবিননামায় জন্মদিন ১৯৪৪ সালের ৪ আগস্ট। সর্বশেষ ২০০১ সালে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট অনুযায়ী, জন্মদিন ১৯৪৬ সালের ৫ আগস্ট।
অভিযোগে আরও বলা হয়, বিভিন্ন মাধ্যমে বেগম জিয়ার পাঁচটি জন্মদিন পাওয়া গেলেও কোথাও ১৫ আগস্ট জন্মদিন পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় তিনি পাঁচটি জন্মদিনের একটিও উদযাপন না করে ১৯৯৬ সাল থেকে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর দিন জাতীয় শোক দিবসে (১৫ আগস্ট) আনন্দ-উৎসব করে জন্মদিন উদযাপন করে আসছেন।
২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই এই দুটি মামলায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ খালেদার জামিন মঞ্জুর করেন।