খুলনা, বাংলাদেশ | ১৯ মাঘ, ১৪৩১ | ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  রাজধানীর হাতিরঝিলের ফুলনপুরায় দুর্বৃত্তের গুলিতে আহত ২

খালেদা জিয়াকে সুস্থ বলার সুযোগ নেই : ডা. জাহিদ

গেজেট ডেস্ক

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সুস্থ আছেন- কোনো অবস্থাতেই এটা বলার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন তার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক ও দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

রোববার (২৮ আগস্ট) রাতে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তির পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ম্যাডাম লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। তার সুচিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা বিশেষ উন্নত সেন্টার করানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। রোববার উনাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। উনি সুস্থ আছেন- এটা কোনো অবস্থাতে বলার সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে এবার নিয়ে ছয়বার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। বেশ কিছু পরীক্ষার জন্য তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। পরীক্ষা শেষে চিকিৎসক বোর্ডের সদস্যরা উনাকে হাসপাতালে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেন। খালেদা জিয়া অসুস্থ, তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন। মেডিকেল বোর্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, তার পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে বিষয়টি বারবার বলা হলেও দুঃখজনকভাবে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডা. জাহিদ বলেন, উনার শারীরিক অবস্থা যদি স্থিতিশীল থাকতো তাহলে তো তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হতো না। ছয় দিন আগেও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য হাসপাতালে এসেছিলেন। আজ (রোববার) আবারো এসেছিলেন। কিন্তু চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।

আশা করি প্রতিহিংসার ঊর্ধ্বে উঠে একজন নাগরিক হিসেবে তার সুচিকিৎসা নিশ্চিতের ব্যাপারে সরকার অতীতে যাই করুক এখন হয়তো তাদের টনক নড়া উচিত বলে মন্তব্য করেন ডা. জাহিদ।

তিনি বলেন, যেসব আইনি বাধার কথা বলা হয়ে থাকে, যদি সরকার চায়, সত্যিকার অর্থে ফিল করে, তাহলে খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ। তিনি এখনো এক অর্থে গৃহবন্দী অবস্থায় আছেন। কাজেই বলার অপেক্ষা রাখে না যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে তার দায়ভার সরকারকে গ্রহণ করতে হবে।

খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে কতদিন থাকতে হবে এবং তার পরীক্ষার রিপোর্টগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. জাহিদ বলেন, চিকিৎসাশাস্ত্রে আগাম কোনো কিছু বলার সুযোগ নেই। তাছাড়া কোনো রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা চিকিৎসকদের বলাটা উচিত নয়, দায়িত্বও নয়। রিপোর্টে কী এসেছে তা জানার প্রয়োজন নেই।

বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, কিন্তু আপনাদের বোঝা উচিত এই রিপোর্টে যা কিছুই আসুক না কেন উনাকে হাসপাতালে আনতে হয়েছে এবং ভর্তি হতে হয়েছে, এটাই বাস্তবতা। উনার রিপোর্টগুলো যদি ভাল ও সুন্দর হতো তাহলে ভর্তির প্রয়োজনীয়তা থাকত না।

৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া হৃৎপিণ্ডের রক্তনালীতে ব্লক, আর্থ্রাটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। গত বছর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান চিকিৎসকরা। এরপর ১১ জুন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার হৃৎপিণ্ডের ব্লক অপসারণ করে একটি ‘স্টেন্ট’ বসানো হয়।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে যান খালেদা জিয়া। পরে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পান তিনি। এরপর থেকে তিনি গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় রয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচবার ছয় মাস করে তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।

২০২১ সালের এপ্রিল মাসে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৫৪ দিন হাসপাতালে ছিলেন। এরপর একই বছরে শারীরিক অসুস্থা নিয়ে ৮১ দিন হাসপাতালে ছিলেন। চলতি বছরের ২৪ জুন ১৩ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া।

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!