খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আগে থেকেই নির্বাচনের মাঠে সক্রিয় রয়েছে আওয়ামী লীগ। দলের মহানগর সভাপতি ও বর্তমান মেয়র তালুকদার আবদুল খালেককে প্রার্থী ধরে নিয়েই চলছে নির্বাচনের প্রস্তুতি। গত ৩ এপ্রিল ভোটের তারিখ চূড়ান্ত হওয়ার পর প্রস্তুতির পালে হাওয়া লেগেছে। প্রায় প্রতিদিনই ব্যস্ত সময় পার করছেন মহানগর আওয়ামী লীগ নেতারা।
এদিকে কেসিসি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে বিএনপি। দল নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপির কেউ প্রার্থী হবেন না বলে চূড়ান্ত ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও সাবেক মেয়র মনিরুজ্জামান মনি প্রার্থী হতে পারেন বলে-ভোটের মাঠে গুঞ্জন ছিলো। তবে বিএনপির এই দুই নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন ।
আগামী ১২ জুন দ্বিতীয় ধাপে খুলনা সিটি কর্পোরেশনে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল গত বছর ২১ জুলাই ১৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কর্মিসভায় তালুকদার খালেককে দলের মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করেন। শেখ জুয়েলকে ঘিরেই এখন খুলনা আওয়ামী লীগের রাজনীতি আবর্তিত হয়। দলের হাইকমান্ডের সম্মতিতে তিনি এই ঘোষণা দেন।
নেতাকর্মীরা জানান, মেয়র পদে খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলামসহ আরও দু’একজন মনোনয়ন চাইতে পারেন। তবে তালুকদার আবদুল খালেকের প্রার্থীতা শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা মাত্র।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা বলেন, কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী খুলনা সফরকালে তালুকদার খালেককে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছিলেন। তাঁর প্রার্থিতার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে আছে।
এদিকে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি আর কোনো নির্বাচনে যাবে না। তাঁরা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে ভাবছেন না।
মেয়র পদে এর আগে একটি নির্বাচনে বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও দুটি নির্বাচনে বিএনপির মনিরুজ্জামান মনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এর মধ্যে মনিরুজ্জামান মনির নির্বাচন করার আগ্রহ নেই বলে জানিয়েছেন।
নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, তিনি দলের প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করতে আগ্রহী। কিন্তু দল যদি নির্বাচনে না যায়, তাহলে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন না।
গত কেসিসি নির্বাচনে অংশ নেওয়া সিপিবিও এবার নির্বাচনে অংশ নেবে না।
অন্যদলগুলোর মধ্যে চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদশ তাদের মহানগর সভাপতি মাওলানা আবদুল আউয়ালকে মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া সামাজিক সংগঠন আগুয়ান-৭১ থেকে মেয়র পদে সংগঠনটির আহ্বায়ক মো. আব্দুল্লাহ চৌধুরীকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে।
এর বাইরে গত নির্বাচনে জামানত হারানো জাপা প্রার্থী এসএম মুশফিকুর রহমান মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে প্রচারণা চালাচ্ছেন। মহানগর জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল গফফার বিশ্বাসও স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন বলে জানিয়েছেন।
মূল জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা তা’ এখনও চূড়ান্ত হয়নি, জানিয়েছেন দলটির জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ১৫ মে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক ১ লাখ ৭৪ হাজার ৮৫১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু পেয়েছিলেন ১ লাখ ৯ হাজার ২৫১ ভোট। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুজ্জাম্মিল হক ১৪ হাজার ৩৬৩ , জাতীয় পার্টির এস এম শফিকুর রহমান মুশফিক ১ হাজার ৭২ ও সিপিবির মিজানুর রহমান বাবু ৫৩৪ ভোট পেয়ে জামানত হারান।