করোনাভাইরাসের কারণে গোটা বিশ্বের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। অনেকেই কাজ হারিয়েছেন। আগামী পৃথিবীতে টিকে থাকতে গেলে এ কারণে খরচ কমাতেই হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা পূববর্তী অর্থনীতি ফিরে পেতে আরও কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। এদিকে জিনিসপত্রের দামও যেভাবে বাড়ছে তাতে সংসার চালানো অনেকের জন্য বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামনে যাতে আরও বিপদে না পড়েন এজন্য এখন থেকে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। সেজন্য যতটা সম্ভব খরচ কমিয়ে সঞ্চয় করার চেষ্টা করতে হবে।
কীভাবে খরচ কমাবেন :
১. যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকু খরচ করুন। এখন সমস্যা নেই বলে শৌখিন জিনিস কিনে অপচয় করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ যেকোন সময়ই বিপদ আসতে পারে।
২. লকডাউনের মধ্যে যেভাবে ঘরোয়া খাবারে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন সেটা বজায় রাখুন। এতে স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। সেই সঙ্গে খরচও কমবে। তাছাড়া করোনার সংক্রমণ এখনও কমেনি। তাই এ সময় বাইরে খাওয়াও ঠিক নয়।
৩. বাড়ি থেকে অফিসে খাওয়ার নেয়ার চেষ্টা করুন। এতে বাইরে খাওয়ার খরচ বাঁচবে। খাবারটাও নিরাপদ হবে।
৪. যতটা প্রয়োজন ঠিক ততটাই নতুন পোশাক কিনুন। পারলে এ বছর যা আছে তা দিয়েই চলার চেষ্টা করুন। এতে খরচ কমবে।
৫. ঘন ঘন পার্লারে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ঘরোয়াভাবে যতটা সম্ভব সৌন্দর্যচর্চা করুন। এমনিতে এখন বাইরে বের হলে মুখের অর্ধেক ঢাকা থাকে মাস্কে, মাথা ঢাকা থাকে টুপি বা ওড়নায়। এ কারণে বেশি রূপচর্চার প্রয়োজন নেই। এছাড়া পার্লারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিয়েও আশঙ্কা থাকে। চুল কাটাতে হয়তো ২-৩ মাসে একবার পার্লারে যেতে পারেন।এর চেয়ে বেশি না যাওয়াই ভাল।
৬. উৎসবে উপহারের বাজেট কাটছাট করুন। উপহার দেওয়া-নেওয়ার বদলে বিপদে আছে এমন মানুষের কল্যাণে টাকাটা কাজে লাগাতে পারেন। এতে মনও ভাল থাকবে।
৭. আপাতত কোথাও বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা স্থগিত রাখুন। সম্ভব হলে ভবিষ্যতের জন্য সেই টাকা জমানোর চেষ্টা করুন।
টাকা জমাবেন যেভাবে
১. আয়ের অন্তত ৫ থেকে ১০ শতাংশ টাকা জমাতে চেষ্টা করুন। শেয়ার মার্কেট এখনও স্থিতিশীল নয়। এ কারণে অভিজ্ঞতা না থাকলে এ সময় শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ না করাই ভালো। বেতন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটা যাতে সঞ্চয়ের জন্য জমা করা যায় সে ব্যবস্থা করুন।
২. সপ্তাহ শেষে বাজেটের সঙ্গে খরচের হিসাব মেলান। কোথায় কম-বেশি হয়েছে সেটা লক্ষ্য রাখুন। বেশি খরচ করে ফেললে সেটা কীভাবে এড়ানো যায় সেই চেষ্টা করুন।
৩. বেতন পাওয়ার পর বাড়ি ভাড়া, ইলেকট্রিক বিল, সন্তানের স্কুলের বেতন ইত্যাদি দেওয়ার পর যে টাকা থাকবে তার ১০ শতাংশ সেভিংস অ্যাকাউন্টে জমা রাখুন। বছরের শেষে প্রিমিয়াম দিতে বা কোনও দরকারে কাজে লাগবে।
বাজেট মেনে চলবেন যেভাবে
১. সপ্তাহে একদিন বা দু’দিন বাজারে যান। তালিকা মিলিয়ে জিনিস কিনুন হিসেব করে। অযথা যাতে কোন খরচ না করেন সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন।
২. বিজ্ঞাপন দেখে বা সস্তায় কিছু কেনা থেকে বিরত থাকুন।
৩. নিজেকে সামলাতে না পারলে অনলাইন শপিং সাইটে ঢোকা বন্ধ করে দিন।
৪. যে ঘরে থাকবেন না, সে ঘরের আলো, ফ্যান বন্ধ করে রাখুন।সারাদিন কম্পিউটার অন করে রাখবেন না।
৫. দরকার না হলে সিএনজি, ক্যাবে চড়বেন না।সকালে-বিকেলে তেমন তাড়া না থাকলে আশপাশের কাজগুলি পায়ে হেঁটে সেরে ফেলুন, সাইকেল থাকলে আরও ভালো।
খুলনা গেজেট/এনএম