বাগেরহাটের চিতলমারীতে রেনেসাঁ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান দাদনে (সুদে) সরকারি ভর্তুকির রাসায়নিক সার বিক্রি করছে। মৌসুম (৩-৪ মাস পর) শেষে তাঁরা প্রতিবস্তা সারে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা লাভ নিচ্ছেন। ওই প্রতিষ্ঠানের দাদনে বিক্রিকৃত ৪৫ বস্তা সার মাছের ঘেরে পড়ে আমার সাড়ে ৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
টাকার অভাবে ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করতে পারছিনা। ক্ষতিপূরণের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্যারের কাছে লিখিত আবদন করেছি। শুক্রবার (২১ অক্টোবর) বেলা ১২ টায় স্থানীয় সাংবাদিকদের এমনটাই বললেন চরবানিয়ারী ইউনিয়নের চরবানিয়ারী উত্তরপাড়া গ্রামের বংশধর বালা। তবে রেনেসাঁ এন্টারপ্রাইজের পরিচালক এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বংশধর বালা আরও জানান, বাড়ির সামনে এক একর জমিতে তিনি চিংড়ি ও সাদা মাছের চাষ করেন। ৩ অক্টোবর নছিমনে পাঠানোর সময় রেনেসাঁ এন্টারপ্রাইজের দাদনে বিক্রিকৃত ৪৫ বস্তা সরকারি ভর্তুকির রাসায়নিক সার তাঁর মাছের ঘেরে পড়ে। অতিরিক্ত সারের বিষক্রীয়ায় কমপক্ষে সাড়ে ৩ লাখ টাকার মাছ মরে যায়। পরে রেনেসাঁ এন্টারপ্রাইজের মাঠকর্মী প্রশান্ত মন্ডল ও কর্তৃপক্ষ তাঁকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা বলে। অদ্যবধি কোন টাকা পয়সা দেননি। তাই ক্ষতিপূরণের দাবীতে বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
চরবানিয়ারী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড খুচরা রাসায়নিক সার বিক্রেতা অসিত বালা অনাদী বলেন, ‘রেনেসাঁ এন্টারপ্রাইজ ৭ থেকে ৮ বছর ধরে আমাদের ইউনিয়নে পাচারের মাধ্যমে সার বিক্রি করছে। যার ফলে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমার সার কৃষকেরা কিনছে না। আমি অবৈধ ভাবে সার বিক্রি বন্ধসহ রেনেসাঁ এন্টারপ্রাইজের পরিচালকদের বিচার দাবি করছি।’
রেনেসাঁ এন্টারপ্রাইজের মাঠকর্মী প্রশান্ত মন্ডল বলেন, ‘ওই ৪৫ বস্তা সার আমি চিতলমারী ও নাজিরপুরের তারাবুনিয়া বাজার থেকে কিনেছি। ওটা চিতলমারীর চরবানিয়ারী উত্তরপাড়া গ্রামের চাষিদের। বিভিন্ন মৌসুমে গ্রাম সমিতির মাধ্যমে আমি সার বিক্রি করি।’
রেনেসাঁ এন্টারপ্রাইজের পরিচালক প্রবীর বিশ্বাস অভিযোগ অস্বীকার বলেন, ‘আমারা দাদনে সার বিক্রি করিনা। ওই সার আমাদের নয়। এছাড়া সমগ্র চিতলমারী উপজেলায় কৃষকদের মাঝে সার বিক্রির লাইসেন্স আমাদের রয়েছে। ’
চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সিফাত আল মারুফ বলেন, ‘দাদনে সার বিক্রির কোন সুযোগ নেই। কৃষক স্বশরীরে সার ক্রয় করবে। চিতলমারীতে পর্যাপ্ত সার থাকা সত্ত্বেও বাইরের উপজেলা থেকে ক্রয় করা অপরাধ।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘অভিযোগটি আমি এখনো হাতে পাইনি। আমি বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কৃষি কর্মকর্তাকে বলছি।’
খুলনা গেজেট/এসজেড