ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে অপারেশনের পর রোজিনা খাতুন (২০) নামে এক প্রসুতির মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (১৫ আগস্ট সকালে শহরের ভাই ভাই ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে তার যোমজ দুই সন্তান বেঁচে আছে। মৃত গৃহবধু শহরতলির জোড়াপুকুরিয়া এলাকার শিলনের স্ত্রী।
এদিকে ঘটনা ধামাচাপা দিতে করোনা উপসর্গ বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ, এমন অভিযোগ পরিবারে।
ওই গৃহবধুর পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, তিনি গত ২/৩ দিন আগে জ্বর নিয়ে ঝিনাইদহ শহরের শামিমা ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছিলেন। জটিলতা থাকায় ওই ক্লিনিকের ডাঃ শামিমা অপারেশনের ঝুঁকি না নিয়ে রোগী ফিরিয়ে দেন। এরপর রোজিনাকে ভর্তি করা হয় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে। সেখান থেকে ফিরিয়ে এনে স্বজনরা শুক্রবার সকাল ৭টায় হরিণাকুন্ডু শহরের ভাই ভাই ক্লিনিকে ভর্তি করেন রোজিনাকে। সেখানে ভর্তির পর তার সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রোজিনার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন তার স্বামী শিলন মিয়া।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে ডাঃ মোঃ জামিনুুর রশিদ জানান, রোজিনার করোনা উপসর্গ ছিল। ছিল প্রচন্ড শ্বাস কষ্টও। অন্যদিকে তার ডেলিভারির সময়ও হয়ে গেছে। এই অবস্থায় তাকে অপারেশন করে দুর্ঘটনা ঘটে বলে তিনি মন্তব্য করেন। মৃত্যুর পর তার নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি ।
এদিকে তথ্য নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ক্লিনিকগুলোতে সেবার কোন মান না থাকলেও জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য দপ্তরকে ম্যানেজ করে চলছে এসব ক্লিনিকের কার্যক্রম। অহরহ সেখানে অপচিকিৎসায় মানুষ মারা গেলেও কোন পদক্ষেপ নেই সংশ্লিষ্টদের বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা লোক দেখানো তদন্ত করেই দায়িত্ব শেষ করেন। অভিযুক্ত এই ভাই ভাই ক্লিনিকটি দীর্ঘদিন ধরেই লাইসেন্সবিহীন কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। তাদের চিকিৎসার পরিবেশও ভাল না। তবুও দেখার কেউ নেই। উপজেলার ক্লিনিকগুলোতে সার্বক্ষণিক কোন চিকিৎসক বা প্রশিক্ষিত নার্স নেই।
অভিযোগ উঠেছে সিভিল সার্জন অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা ক্লিনিকের এই ফাইলগুলো দেখভাল করেন। তারাই মিথ্যা তথ্য দিয়ে বছরের পর বছর মানহীন এসব ক্লিনিক বহাল রাখার চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিনা বেগম জানান, আমরা মাতৃ মৃত্যু কোন ভাবেই সহ্য করবো না। হরিণাকুন্ডুতে ভাই ভাই ক্লিনিকে মৃত্যুর ব্যাপারে আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
তিনি আরও বলেন, আগামী ২৩ আগষ্ট পর্যন্ত এ সব ক্লিনিকের শেষ সময় দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তারা শর্ত পুরণ করতে না পারলে সবগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট / এমএম