খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৫৮

ক্লাসরুম সংকটে শিক্ষক লাউঞ্জে ক্লাস, ইবি শিক্ষকের প্রতিবাদ

ইবি প্রতিনিধি

দীর্ঘদিন ধরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের ক্লাস রুম সংকটের কারণে শিক্ষক লাউঞ্জে ক্লাস করার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এস এম আব্দুর রহিম।

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯ টা থেকে ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ ভবনের নিচ তলায় তিনি এ কর্মসূচি পালন করেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ইইই ও ফার্মেসী বিভাগ ক্লাসরুম সংকট থাকায় তারা ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের ক্লাসরুম গুলোতে ক্লাস করতেন। নতুন ভবন হওয়ায় তাদের নতুন ক্লাসরুম দেওয়া হয়। কিন্তু পরে ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি এবং বায়ো টেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ তাদের ক্লাস রুম জোর করে দখল করে নেয়। ক্লাসরুম সংকটের বিষয়ে দুই মাস ধরে কর্তৃপক্ষকে অবগত করলেও কোনো ফল পাননি বলে অভিযোগ তাদের। এছাড়া প্রত্যেক ব্যাচে প্রায় ছয় মাসের জট, ১ টার বেশি ক্লাস করতে না পারা, ছয়টা ব্যাচের জন্য মাত্র দুইটা ক্লাসরুম রয়েছে বলে জানান তারা।

এদিকে সংকট মোকাবিলার জন্য কোনো উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে শিক্ষক লাউঞ্জে ক্লাস শুরু করেন তারা। ক্লাস করতে গিয়ে হ্যারেজমেন্টের শিকারসহ গেটের সামনে বসে একজন শিক্ষক এক প্যাকেট বেনসন ও এক ডজন কলা নিয়ে বসে ছিলেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে ইইই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এস এম আবদুর রহিম বলেন, প্রতিদিনের মতো আজকে সকালে নাস্তা করার জন্য এসেছিলাম। এসে দেখি শিক্ষক লাউঞ্জ তালাবদ্ধ। ম্যানেজারকে বললাম এখানে তালা দেওয়া কেন। সে বলল, ক্যামেস্ট্রি বিভাগ তালা দিয়েছে। কেনো তালা দিয়েছে সে জানেনা। শিক্ষক লাউঞ্জ একটা বিভাগ দখল করে নিবে কেন? এটা তো অন্য কোনো ব্যাপার নয় এটা শিক্ষক সংশ্লিষ্ট ব্যাপার। শিক্ষক সমিতির রুমটা দখল করে নিয়েছে এটা আমার আত্মসম্মানে লেগেছে বিধায় এখানে বসে আছি। লাউঞ্জ উদ্ধার না করা পর্যন্ত এখান থেকে উঠব না।

তিনি বলেন, আমি শিক্ষক সমিতির সভাপতি-সম্পাদক, শাপলা ফোরামের সভাপতি-সম্পাদক শিক্ষকদের যে গ্রুপ আছে সেখানে জানিয়েছি। এখন পর্যন্ত কেউ কোনো ফিডব্যাক দেয়নি। কেউ ফোনও দেয়নি। আমার কাছে মনে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সময় যে সমস্যাগুলো হচ্ছে এটা পূর্বপরিকল্পিত। যেহেতু সামনে নির্বাচন সেহেতু আসূভশক্তি ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে উস্কিয়ে দিচ্ছে। যার ফল হচ্ছে দখল। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সেহেতু আমার শিক্ষক লাউঞ্জ লাগবে।

এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, শিক্ষক সমিতির অফিসের সামনে কেউ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে এরকম আমার জানা নেই। অফিসের কেউ আমাকে এ বিষয়ে অবগত করেনি।

ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শরিফ মোঃ আল-রেজা বলেন, সায়েন্স ফ্যাকাল্টিতে আমরা এক সময় সেশনজট মুক্ত বিভাগ ছিলাম। রিসোর্সের দিক থেকে আমাদের শিক্ষকরা অনেক এগিয়ে। শিক্ষার্থীরা আমাদের বিভাগে আসবে আর ক্লাস হবে না এই ক্যালচার আমাদের নেই। ২০২২-২৩ সেশন ভর্তি হওয়ার ফলে ৬ টা সেশন রানিং রয়েছে। ৬ টা সেশনের জন্য দুইটা ক্লাস রুম থাকায় রুম সংকটে ভুগছে শিক্ষার্থীরা। আমরা প্রশাসনকে কয়েকবার জানিয়েছি। পরে আমাদের শিক্ষার্থীরা ভিসি স্যারের সাথে দেখা করেন। তিনি তাদের আশ্বস্ত করলেও এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীরা হইতো ওই রুমে তালা দিয়েছে। আমি এটা পরে শুনেছি। আশা করি সংকটের বিষয়ে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন।

শিক্ষকের অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানিনা। আমাকে কোনো শিক্ষক এ বিষয়ে ফোন দেয়নি।

এ বিষয়ে উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, এটা সমাধান করার জন্য কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক সমিতির সভাপতি-সম্পাদক, সায়েন্স ফ্যাকাল্টির তিনজন ডিন নিয়ে এ কমিটি করা হয়েছে। তারা এখনো আমাদের রিপোর্ট দেয়নি। রিপোর্ট দিলে সমাধান হয়ে যাবে।

খুলনা গেজেট/ টিএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!