কার্টিস ক্যামফারের রেকর্ডগড়া ডাবল হ্যাটট্রিকের সুবাদে নেদারল্যান্ডসকে ১০৬ রানে অলআউট করে আয়ারল্যান্ড। সহজ লক্ষ্যের জবাবে আয়ারল্যান্ড পেয়েছে ৭ উইকেটের জয়।
আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নামে নেদারল্যান্ডস। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান বেন কুপার রানআউটের শিকার হয়ে ফেরেন গোল্ডেন ডাক নিয়ে। ব্যাস ডি লিডি ১১ বলে ৭ রান করে ফিরলে ২২ রানে ২ উইকেট হারায় নেদারল্যান্ডস। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে তারা সংগ্রহ করে ২ উইকেটে ২৫ রান।
নেদারল্যান্ডসের ইনিংসের দশম ওভারে বিশ্বরেকর্ড গড়েন ক্যামফার। ওভারের প্রথম বলে ওয়াইড দেন তিনি। পরের বলটি ছিল ডট। দ্বিতীয় বলে কলিন অ্যাকারম্যানকে উইকেটরক্ষক নেইল রকের ক্যাচে পরিণত করে প্রথম উইকেটটি পান ক্যামফার।
নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে আসেন তারকা অলরাউন্ডার রায়ান টেন ডেসকাট। তিনি শিকার হন গোল্ডেন ডাকের, এলবিডব্লিউ হওয়ার মাধ্যমে। পরের বলেও এলবিডব্লিউ করেন ক্যামফার। এ দফায় তার শিকার হন স্কট এডওয়ার্ডস। এতে হ্যাটট্রিক পূর্ণ হয় ২২ বছর বয়সী তরুণ আইরিশ অলরাউন্ডারের।
এখানেই থেমে থাকেননি ক্যামফার। ওভারের পঞ্চম বলে রিওলফ ফন ডার মারয়েকে শিকার করে টানা চার বলে চারটি উইকেট নেন তিনি। মারয়ে বোল্ড হন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম ডাবল হ্যাটট্রিকের রেকর্ড গড়েছেন ক্যামফার। এর আগে বিশ্বকাপে একমাত্র হ্যাটট্রিক ছিল অস্ট্রেলিয়ার ব্রেট লির। টি-টোয়েন্টিতে ডাবল হ্যাটট্রিক আছে শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গা ও আফগানিস্তানের রশিদ খানের।
৫১ রানে ৬ উইকেট হারানো নেদারল্যান্ডসকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন অধিনায়ক পিটার সিলার। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ম্যাক্স ও’ডাউড ও সিলার সপ্তম উইকেটে গড়েন ৩৭ রানের জুটি। ম্যাক্স আউট হলে ভাঙে এই জুটি। একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সতীর্থদের আসা-যাওয়া দেখা ম্যাক্স সাজঘরে ফেরেন ৪৭ বলে ৫১ রান করে।
২৯ বলে ৪৪ রান করেন গ্যারেথ ডিলানি
অধিনায়ক সিলার ২৯ বলে করেন ২১ রান। লগান ফন বিকের ব্যাট থেকে আসে ১২ বলে ১১ রান। ইনিংসে শেষ বলে অলআউট হয় নেদারল্যান্ডস। নির্ধারিত ২০ ওভার খেলে ডাচরা সংগ্রহ করে ১০৬ রান।
আইরিশদের পক্ষে মার্ক অ্যাডায়ার ৪ ওভারে মাত্র ৯ রান খরচ করে শিকার করেন ৩টি উইকেট। ক্যামফার ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ডাবল হ্যাটট্রিকে ৪টি উইকেট নেন। এছাড়া একটি উইকেট পান জশুয়া লিটল।
সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে পল স্টার্লিং ও কেভিন ও’ব্রায়েন গড়েন ২৭ রানের উদ্বোধনী জুটি। তবে হাসেনি ও’ব্রায়েন এবং অ্যান্ড্রু বালবির্নির ব্যাট। ও’ব্রায়েন ১০ বলে ৯ রান ও বালবির্নি ৬ বলে ৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন। ৩৬ রানে ২ উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে তারা সংগ্রহ করে ৩৮ রান।
দ্বিতীয় উইকেটে আয়ারল্যান্ডকে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন স্টার্লিং ও গ্যারেথ ডিলানি। স্টার্লিং কেবল সঙ্গ দিতে থাকেন এবং অপরপ্রান্তে দ্রুতগতিতে রান তোলার কাজটি ডিলানি করেন। দারুণ খেলতে থাকা এই ব্যাটার ২৯ বলে ৪৪ রান করে সিলারের বলে বোল্ড হন। জয়ের দ্বারপ্রান্তে এসে ৯৫ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড।
বল হাতের নায়ক ক্যামফারই ব্যাট হাতে আয়ারল্যান্ডের পক্ষে জয়সূচক রানটি করেন। ২৯ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের জয় দিয়ে বিশ্বকাপ করল আয়ারল্যান্ড। স্টার্লিং অপরাজিত থাকেন ৩৯ বলে ৩০ রান করে। বিশ্বকাপে এটিই নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আয়ারল্যান্ডের প্রথম জয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নেদারল্যান্ডস ১০৬/১০ (২০ ওভার)
ম্যাক্স ৫১, সিলার ২১;
ক্যামফার ৪/২৬, অ্যাডায়ার ৩/৯।
আয়ারল্যান্ড ১০৭/৩ (১৫.১ ওভার)
ডিলানি ৪৪, স্টার্লিং ৩০*, ক্যামফার ৭*;
সিলার ১/১৪।
আয়ারল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী।
খুলনা গেজেট /এমএম