ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ কোয়াব খুলনা শাখা আয়োজিত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বারাকপুর ক্রিকেটার্স। শুক্রবার খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে টানটান উত্তেজনাপূর্ণ খেলায় তারা ২ উইকেটে রানা-সেতু মেমোরিয়ালকে পরাজিত করে। ফাইনালে আগে ব্যাট করে রানা-সেতু মেমোরিয়াল ১৯.৪ ওভারে ১৫৫ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৯.১ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। খুলনার প্রয়াত ক্রিকেটার শেখ সালাহ উদ্দিন, মানজারুল ইসলাম রানা, সেতু, তুষার, জর্জি, পিন্টু স্মরণে কোয়াব খুলনা এ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
আগে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১০ রানে প্রথম তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে রানা-সেতু মেমোরিয়াল। তবে এরপর দলের হাল ধরেন রাজু। তার অনবদ্য ব্যাটিংয়ে ভর করেই বিপর্যয় কাটিয়ে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় রানা সেতু মেমোরিয়াল। মাঝে আরও দুইটি দ্রুত উইকেট পড়লেও পরের দিকে রাজুকে সঙ্গ দেন প্রিন্স। এই দুইজন ব্যাটে ভর করে ১৯.৪ ওভারে ১৫৫ রান সংগ্রহ করে অল আউট হয়। রাজু মাত্র ৪৮ বলে ৮টি বিশাল ওভার বাউন্ডারি ও ২টি বাউন্ডারির সাহায্যে করেন ৬৭ রান। আর প্রিন্সের ব্যাটে যোগ হয় ৪৫ রান। মাত্র ২২ বলে ৬টি ওভার বাউন্ডারি ছিলো তার ইনিংসে। বারাকপুর ক্রিকেটার্সের হয়ে আজিজুল, সাইফুল, সজল ও সালমান প্রত্যেকে ২টি করে উইকেট নেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৪ রানে প্রথম উইকেট হারিয়ে শুরুটা ভালো হয়নি বারাকপুর ক্রিকেটার্সেরও। তবে এরপর মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়তায় জয়ের নাগাল পেয়ে যায় তারা। যদিও শেষদিকে খেলা দারুণ উত্তেজনা তৈরী হয়। শেষ পর্যন্ত ১৯.১ ওভারে ২ উইকেট হাতে রেখে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বারাকপুর ক্রিকেটার্স। একই সাথে শিরোপাও নিশ্চিত হয়ে যায় তাদের। বারাকপুর ক্রিকেটার্সের হয়ে ৩৭ বলে ৩টি ওভার বাউন্ডারি ও ২টি বাউন্ডারির সাহায্যে সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন। ২১ বলে ৩০ রান করে দলকে জয়ে বড় সহায়তা করেন শোভন মোড়ল। এছাড়া শুভ ১৮ বলে ২৭, ফারুক ২১ রান করেন। রানা-সেতু মেমোরিয়ালের হয়ে হৃদয়, বাবু ও সুজন প্রত্যেকে ২টি করে উইকেট নেন।
ফাইনালে অনবদ্য পারফরমেন্সে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন বিজয়ী দলের শোভন মোড়ল। ১১ উইকেট নিয়ে ও ৭৯ রান করে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার জেতেন রানা সেতু মেমোরিয়ালের হাবিবুল হাসান সুজন। ১৩৯ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের পুরস্কার জিতে নেন সাইদ হাসান শুভ। একই দলের সালমান হোসেন ১১টি উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহকের পুরস্কার জিতে নেন।
ফাইনাল খেলা শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জিয়াউর রহমান। কোয়াব খুলনার সভাপতি জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার জিয়াউর রহমান জনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি এড. সাইফুল ইসলাম, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক কাজী শামীম আহসান, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য ও টাউন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সুজন আহমেদ, জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার তুষার ইমরান, জেলা দলের সাবেক ক্রিকেটার কাজী ফয়েজ মাহমুদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে কোয়াব খুলনার সদস্য ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২৬ আগস্ট থেকে খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে মোট ৩২ দলের অংশ গ্রহণে নক আউট পদ্ধতিতে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
খুলনা গেজেট/এএমআর