সারা বছর সীমিত পরিমাণে মাংস খেলেও কোরবানির ঈদ এলে অনেকের মাংস খাওয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। রেড মিটে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও কোলেস্টেরল থাকার কারণে অনেক ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা বাড়ে।
গ্যাস্ট্রিক, হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, হাই কোলেস্টেরল বা স্থূলতার সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন অথবা এসব রোগের প্রাথমিক লক্ষণ আছে, তাঁদের জন্য স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রেড মিট খাওয়া বিপদের কারণ হতে পারে।
আমাদের একটু নজর দেওয়া দরকার আমরা কী খাচ্ছি, কতটুকু খাচ্ছি, শরীরে বিভিন্ন খাবারের কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে, তার ওপর। মূল সমস্যাটা নিঃসন্দেহে খাবারের পরিমাণে। অনেকেই একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণ চর্বিযুক্ত খাবার খেয়ে হজম করতে পারেন না। কোরবানির মাংস পরিমাণে একটু বেশিই খাওয়া হয়। অধিক পরিমাণে মাংস খাওয়ার ফলে হজমে সমস্যা, পেট ফাঁপে, জ্বালাপোড়া করে, ব্যথা করে। গ্যাস্ট্রিকে আক্রান্ত রোগীদের সমস্যাটা আরও বেশি। পর্যাপ্ত পানি বা তরল খাদ্য গ্রহণ না করার কারণে অনেকে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন।
কী পরিমাণ মাংস খাওয়া উচিত
দৈনিক গরুর মাংস খাওয়ার নিরাপদ মাত্রা হলো ৩ আউন্স বা ৮৫ গ্রাম। যদি ৩ আউন্স বা ৮৫ গ্রাম চর্বি ছাড়া গরুর মাংস খাওয়া হয়, তাহলে এটা থেকে দৈনিক ক্যালরির চাহিদার মাত্র ১০ শতাংশ ক্যালরি আসবে। ৩ আউন্স মাংসে আছ ২০০ ক্যালরি, মানুষের প্রয়োজন দৈনিক ২০০০ ক্যালরি।
স্বাস্থ্যকর উপায়ে মাংস খাওয়ার কিছু টিপস
১। শারীরিক পরিস্থিতি, বয়স ও স্বাস্থ্য বুঝে মাংস পরিমিত হারে খেতে হবে। খাবারের পরিমাণের ওপর এই নিয়ন্ত্রণ রাখাটা সবার জন্যই জরুরি।
২। মাংস অল্প তেলে রান্না করতে হবে। তেলটি অলিভ অয়েল হলে সবচেয়ে ভালো।
৩। মাংস উচ্চ তাপে ভালোভাবে সেদ্ধ করে খেতে হবে। সবচেয়ে ভালো আগুনে ঝলসে খেতে পারলে। এতে জীবাণুর সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে না।
৪। কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে প্রচুর পরিমাণে পানি, শরবত, ফলের রস, ইসবগুলের ভুসি ও অন্যান্য তরল খাবার বেশি খেতে হবে।
৫। যেদিন মাংস একটু বেশি খাওয়া হবে, সেদিন অন্য দিনের চেয়ে ২০-৩০ মিনিট বেশি হাঁটতে হবে। এমনভাবে হাঁটতে হবে যেন গা থেকে ঘাম ঝরে। এতে বাড়তি ক্যালোরি পুড়িয়ে ফেলা সম্ভব হবে।
লেখক: মেডিকেল অফিসার, জয়নুল হক সিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল
খুলনা গেজেট/এইচ