যশোরের কেশবপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৬ জন প্রার্থীর জামানত রাজেয়াপ্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৩ জন চেয়ারম্যান ও ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন। এবারের নির্বাচনে উপজেলায় তিনটি পদে মোট ১৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন।
জামানত বাজেয়াপ্তরা হলেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী ওবায়দুর রহমান (জোড়া ফুল), এসএম মাহবুবুর রহমান (মোটরসাইকেল) ও ইমদাদুল হক (আনারস) এবং ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল লতিফ রানা (মাইক), সুমন সাহা (চশমা) ও মনিরুল ইসলাম (টিউবওয়েল)। শুক্রবার ওই ছয়জন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুরে মোট ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ২০ হাজার ৯৫৪ জন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট পড়েছে ৬২ হাজার ৮১টি। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট পড়েছে ৬২ হাজার ৬৮টি। অর্থাৎ ভোট পড়েছে মাত্র ২৮ দশমিক ১০ শতাংশ। নির্বাচন কমিশনের নতুন আইন অনুযায়ী, একটি নির্বাচনী এলাকায় যত ভোট পড়বে তার শতকরা ১৫ শতাংশের কম ভোট পেলে ওই প্রার্থীর জমা দেয়া জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত হবে।
এ হিসেবে দেখা গেছে, চেয়ারম্যান পদে মোট প্রদত্ত ভোট ৬২ হাজার ৮১-এর ১৫ শতাংশ ভোট হবে ৯ হাজার ৩১২টি। চেয়ারম্যান প্রার্থী ওবায়দুর রহমান (জোড়া ফুল) ২ হাজার ১১৫ ভোট, এস এম মাহবুবুর রহমান (মোটরসাইকেল) ১ হাজার ৭৬৩ ভোট ও ইমদাদুল হক (আনারস) ৬৯৫ ভোট পেয়েছেন। তারা নির্ধারিত ভোটের চেয়ে কম পাওয়ায় জামানত হারাচ্ছেন।
এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোট প্রদত্ত ভোটের ৬২ হাজার ৬৮-এর ১৫ শতাংশ ভোট হবে ৯ হাজার ৩১০টি। ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল লতিফ রানা (মাইক) পেয়েছেন ৬ হাজার ৪৪৩ ভোট, সুমন সাহা (চশমা) ৬ হাজার ১৯০ ভোট ও মনিরুল ইসলাম (টিউবওয়েল) ৩ হাজার ১০৭ ভোট পেলেও নির্ধারিত ভোটের চেয়ে কম পাওয়ায় তারাও হারাচ্ছেন জামানত।
এবার নির্বাচন কমিশনে প্রার্থী হওয়ার জন্য জামানত দিতে হয়েছে চেয়ারম্যান পদে এক লাখ টাকা ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭৫ হাজার টাকা।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, কেশবপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর স¤পাদক মফিজুর রহমান (ঘোড়া) ১৮ হাজার ৪৬৬ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন (তালা) ৩২ হাজার ৪৩৪ ভোট ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা মহিলা লীগের সভানেত্রী রাবেয়া ইকবাল (ফুটবল) ৩৭ হাজার ৩০৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী মফিজুর রহমানের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম স¤পাদক নাসিমা আকতার সাদেক (শালিক) পেয়েছেন ১৪ হাজার ১৬ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করা আব্দুল্লাহ আল মামুনের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক পলাশ কুমার মল্লিক (উড়োজাহাজ) পেয়েছেন ১৩ হাজার ৪৯১ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রাবেয়া ইকবালের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বি মনিরা খানম (কলস) পেয়েছেন ২৪ হাজার ১৫৭ ভোট।
এ ব্যাপারে সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ২০ হাজার ৯৫৪ জন। চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬২ হাজার ৮১টি এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬২ হাজার ৬৮টি ভোট পড়েছে। অর্থাৎ ভোট পড়েছে ২৮ দশমিক ১০ শতাংশ। নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী, প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট যদি মোট প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশের কম হয়, তাহলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। সেক্ষেত্রে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনটি পদে অংশ নেওয়া ১৪ জন প্রার্থীর মধ্যে ওই ছয়জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেয়া বাবদ ৫ লক্ষাধিক টাকা সরকারের তহবিলে জমা পড়েছে।
খুলনা গেজেট/কেডি