খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গ্রেপ্তার

কেশবপুরের হাটবাজারে চলছে কেরাম ও জুয়ার আসর

কেশবপুর প্রতিনিধি

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকার জনগণকে নিজ নিজ ঘরে থাকার নির্দেশনা দিলেও কেশবপুরে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন মোড়ে ও হাটবাজারে চায়ের দোকানের আড়ালে জুয়ার তাস ও কেরামবোর্ড খেলা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় উপজেলার বিভিন্ন ছোটবড় বাজারের বেশীর ভাগ চায়ের দোকানে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত জুয়ার তাস ও কেরামবোর্ড খেলা চলছে বলে জানা গেছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিভিন্ন বয়সের যুবক ও স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররা ঝুঁকে পড়ছে ওই জুয়া খেলায়। যার ফলে ধীরে ধীরে লেখাপড়া থেকে দূরে সরে যাচ্ছে ওই সব ছাত্ররা। এ ছাড়া চিহ্নিত অপরাধীরাও দিন-রাত তাস ও কেরাম বোর্ড নিয়ে ব্যস্ত থাকে বলে জানা গেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকরী কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা বলেও অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, করোনা ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করায় সরকার জরুরি প্রয়োজন ব্যতিত সকলকে নিজ ঘরে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে এবং স্থানীয় প্রশাসনের কার্যকরী ব্যবস্থা না থাকায় উপজেলার কলাগাছি বাজার, গৌরীঘোনা বাজার, ভেরচী বাজার, পাঁজিয়া বাজার, গড়ভাঙ্গা বাজার, নতুনহাট বাজার, জাহানপুর বাজার, সাতবাড়িয়া বাজার, বেগমপুর বাজার, ত্রিমোহিনী বাজার, সরসকাটী বাজার, চিংড়া বাজার, সাগরদাঁড়ি বাজার, হাসানপুর বাজার, প্রতাপপুর বাজার, হিজলডাঙ্গা ব্রীজ সংলগ্ন টোং ঘর, হিজলডাঙ্গা মোড়ে চায়ের দোকান, ভালুকঘর বাজার, শ্রীরামপুর বাজার, শ্রীফলা বাজারসহ গ্রামের মোড়ে মোড়ে অধিকাংশ চায়ের দোকানে কেরাম বোর্ডের নামে পুরোদমে চলছে হাজার হাজার টাকার জুয়া খেলা। এ সময় জুয়া খেলায় অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা যুবক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উঠতি বয়সী শিক্ষার্থীরা।

শ্রীরামপুর গ্রামের আয়শা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে বিদেশ থেকে আসার পর আমাকে খাওয়া দাওয়া দেয় না। সে ‘স’ মিলের কাজের শেষে চায়ের দোকানে গিয়ে জুয়ার কেরামবোর্ড খেলায় মত্ত থাকে।’

পাঁজিয়া এলাকার কবির হোসেন জানান, জুয়া খেলার কারণে এলাকার ব্যাপক চুরির হিড়িক পড়ে গেছে। এসমস্ত ছিচকে চোরেরা রাতের আধারে বাইসাইকেল, মোটর ভ্যান চুরি করে স্বল্প দামে তা বিক্রি করে জুয়া খেলাসহ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে।

সম্প্রতি উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের রাজনগর বাকাবর্ষী গ্রামের ইসহাক গাজীর ছেলে নজরুল ইসলাম ও একই গ্রামের আবেদ সরদারের ছেলে উজ্জলের মটর ভ্যান চুরি হয়ে যায়। শুক্রবার সাগরদাঁড়ি বাজার থেকে একটি ইজিবাইক চুরির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন বাজারে চুরির ঘটনা ঘটছে। মাদক ও জুয়ার সাথে জড়িত ব্যক্তিরা চুরির সাথে জড়িত বলে এলাকাবাসীর ধারণা। এছাড়াও চিহ্নিত অপরাধীরাও নিজেদের লুকিয়ে রাখতে দিন-রাত কেরাম বোর্ড নিয়ে ব্যস্ত থাকে এবং সুযোগমত ভালো ছেলেদেরও দলে ভিড়িয়ে চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত করে আসছে। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী জুয়ার তাস ও কেরামবোর্ড খেলা বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে পাঁজিয়া ইউনিয়নের সাগরদত্তকাটি গ্রামের আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘গত শুক্রবার রাতে তার ব্যবহৃত বাই সাইকেলটি চুরি হয়ে গেছে। গভীর রাতে বাড়িতে ঢুকে তার সাইকেলটি চুরি করে নিয়ে যায় বলে সে জানায়।’ তারমতে ওই এলাকার রেজাউল, হারুন ও রেজোয়ানের বাই সাইকেলও চুরির ঘটনা ঘটেছে। জুয়ারী ও মাদক ব্যবসায়ীরা এই চুরির সাথে জড়িত বলে সে দাবি করেছেন।

এ বিষয়ে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জসিম উদ্দীন বলেন, ‘চুরির ঘটনায় কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকা থেকে জুয়াড়ী ও মাদকসেবীদের আটক করা হয়েছে। আমাদের এ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!