খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  বিচার বিভাগকে ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে : ড. ইউনূস
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৩৮৯
  পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব : প্রধান উপদেষ্টা

কেন্দ্র দখল ও অনিয়ম : ওবায়দুল কাদেরের ভাইসহ তিন প্রার্থীর ভোট বর্জন

গেজেট ডেস্ক

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই মো. শাহদাত হোসেনসহ দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী। অপর প্রার্থী হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান। একই সঙ্গে একই অভিযোগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী ফাতেমা বেগম ওরফে পারভীনও। বুধবার ভোট গ্রহণ শুরুর দুই ঘণ্টার মাথায় ৭১টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪০টি দখল করে সিল মারার অভিযোগে তাঁরা ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

ভোট বর্জনকারী তিন প্রার্থী প্রহসনের ওই সাজানো ভোট বাতিল করে নতুন নির্বাচনের দাবি করেছেন। সকাল ১০টায় সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বসুরহাট পৌরসভার বাড়ির পাশের উদয়ন প্রিক্যাডেট একাডেমি কেন্দ্রে ভোট বর্জনের প্রাথমিক ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে তাঁরা দুপুর ১২টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের দপ্তরে গিয়ে লিখিতভাবে ভোট বর্জন ও পুনর্নির্বাচনের দাবিসংবলিত অভিযোগপত্র জমা দেন।

লিখিত অভিযোগে ভোট বর্জনকারী তিন প্রার্থী অভিযোগ করেন, সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরুর আগেই উপজেলার ৭১টি কেন্দ্রের প্রায় প্রতিটি থেকে তাঁদের এজেন্টদের কাছ থেকে ফরম ছিনিয়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়। বিষয়গুলো নিয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ করেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। তা ছাড়া ওই নির্বাচনে যাঁরা প্রশাসনিকভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাঁদের কাছে ফোন করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

প্রার্থীদের অভিযোগ, ভোট শুরুর পর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কাদের মির্জার ছেলে তাশিক মির্জার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা ১০টি মাইক্রোবাসে বসুরহাট পৌরসভার কেন্দ্রে এবং উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মহড়া দিয়ে আনারস ও টেলিফোন প্রতীকের এজেন্টদের মারধর করে বের করে দিয়ে কেন্দ্র দখল করেন। একইভাবে ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক, জাহেদুল হক, সিরাজিস সালেহিন, আইয়ুব আলী, নিজাম উদ্দিন, মহিউদ্দিন সোহাগ ও কাদের মির্জার ভাগনে ফখরুল ইসলামর নেতৃত্বে কেন্দ্র দখল করা হয়।

অভিযোগ দায়ের শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের মিজানুর রহমান বাদল বলেন, ভোটের ১৫ দিন আগে থেকে কোম্পানীগঞ্জে পাতানো নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করা হয়। এই পরিকল্পনার সঙ্গে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও পুলিশ জড়িত। ভোটের প্রচার শুরু থেকে তাঁর কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি, প্রচারে বাধা দেওয়া হলেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

একই সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই টেলিফোন প্রতীকর প্রার্থী মো. শাহদাত হোসেন। তিনি বলেন, তিনি অনেক লড়াই করে নির্বাচনে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। কিন্তু তাঁকে প্রচারে নামতে দেননি তাঁর আরেক বড় ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার লোকজন। তিনি ডিসি, এসপিকে অনেকবার জানিয়েছেন। তাঁরা কোনো পদক্ষেপ নেননি। অনেক সময় ফোন ধরতেন না তাঁরা। সুতরাং বিচার দিয়েও কী লাভ হবে? কে বিচার করবে? প্রশাসনের লোকেরাও এই অনিয়মের সঙ্গে জড়িত।

তিন প্রার্থীর ভোট বর্জন ও অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান  বলেন, ‘অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এজেন্ট বের করে দেওয়ার যে অভিযোগ করা হয়েছে, সেটি কোন কেন্দ্রের, তা প্রার্থীরা নিশ্চিত করতে পারেননি। সুষ্ঠু পরিবেশেই ভোট হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভোট সুষ্ঠু করতে সব রকমের পদক্ষেপই নেওয়া হয়েছে। এরপরও কোনো প্রার্থী যদি ভোট বর্জন করেন, সেটি একান্ত তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।’

একই বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, প্রার্থীর এজেন্ট কেন্দ্রে না এলে তো কিছু করার নেই। যেসব কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে, তাঁরা গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাননি। অনেক কেন্দ্রে ওই দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর কোনো এজেন্টই ছিল না।

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!