খুলনা, বাংলাদেশ | ১৪ মাঘ, ১৪৩১ | ২৮ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  বেতনের সাথে অবসর ভাতা দেয়াসহ বিভিন্ন দাবি পূরণ না হওয়ায় আজ মধ্যরাত থেকে ট্রেন না চালানোর ঘোষণা রেলের রানিং স্টাফদের
  ঢাবির প্রো-ভিসির পদত্যাগ চেয়ে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের

কেএনএ’র গুলিতে বান্দরবানে সেনাসদস্য নিহত

বান্দরবানের রুয়াংছড়ির দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) অতর্কিত গুলিবর্ষণে এক সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও দুই সেনাসদস্য। সোমবার (১৩ মার্চ) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আইএসপিআর জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে জাতীয় শিশু দিবস ও মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় মা ও শিশুদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিতে যাওয়া দলের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল সেনাবাহিনীর একটি টহল দল। রোববার (১২ মার্চ) দুপুর ১টায় কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল অতর্কিত ওই টহল দলের ওপর গুলিবর্ষণ করে।

এ ঘটনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং দুই সেনাসদস্য আহত হন। আহতরা বর্তমানে চিকিৎসাধীন।

মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন ৩০ বছর ধরে অত্যন্ত সততা, নিষ্ঠা এবং পেশাদারত্বের সঙ্গে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার বাবার নাম মৃত শমসের আলী। তিনি রংপুর সদরের ঘাঘটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

দেশ মাতৃকার সেবায় নাজিম উদ্দিনের মৃত্যুতে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

আইএসপিআর আরও জানায়, বিচ্ছিন্নতাবাদী ভাবধারায় বিশ্বাসী কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি নামক সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলটি এর আগে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার মতো একটি জঙ্গি গোষ্ঠীকেও বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকায় অর্থের বিনিময়ে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

পাহাড়ি এলাকার অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য সরকারের নির্মিতব্য বান্দরবানের থানচি সড়ক সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। সরকারের এ উন্নয়নমূলক কার্যক্রমকে প্রতিহত করার জন্য সন্ত্রাসী দল কেএনএ সড়ক নির্মাণ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত অসামরিক ঠিকাদার, মালামাল সরবরাহকারী এবং শ্রমিকদের কাছ থেকে প্রথমে চাঁদা দাবি করে ও পরে কাজ বন্ধ করার হুমকি দেয়।

কিন্তু সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এ কাজ চলমান থাকায় কেএনএ সন্ত্রাসী দল ১১ মার্চ ১২ জন শ্রমিককে অপহরণ করে। তাদের মধ্যে একজন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হন এবং চারজন শ্রমিককে এখনো কেএনএ জিম্মি করে রেখেছে। অবশিষ্ট সাতজন শ্রমিককে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দিলেও তাদের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ না করার জন্য হুমকি প্রদান করে। এছাড়া কেএনএ ১২ মার্চ সেনাবাহিনীর টহল দলের ওপর গুলিবর্ষণ করে।

৮ ফেব্রুয়ারি বান্দরবানের তিন উপজেলায় গাড়ি চলাচল বন্ধের জন্য কেএনএ পরিবহন মালিক সমিতিকে হুমকি প্রদান করে নোটিশ জারি করে। কেএনএ সদস্যদের বিবিধ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দ্বারা সৃষ্ট নিরাপত্তাজনিত কারণে রোববার (১২ মার্চ) ওই এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে জেলা প্রশাসন।

এছাড়াও কেএনএর নির্যাতনে স্থানীয় বিভিন্ন পাহাড়ি সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী ঘর ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছে। কেএনএ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর চাঁদাবাজি, মাদকের চোরাচালান, অপহরণ ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কারণে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, বেসরকারি বিনিয়োগ ও পর্যটন শিল্প বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যার সূদুরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে।

কেএনএর এ অপতৎপরতা দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার পাশাপাশি বিশ্ব দরবারে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে এবং সর্বোপরি পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান শান্তি-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে বিঘ্নিত করছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানায় আইএসপিআর।

খুলনা গেজেট/ এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!