পরপর দু’বছর করোনার ধাক্কা আর এবারের অনাবৃষ্টিতে আমনের লোকসান কাটাতে খুলনার কৃষক ৬ মাস বোরো চাষে নামে। কষ্টের ধান ব্লাস্টের থাবায় পড়েছে। জেলার বেশিরভাগ বোরো ক্ষেতে ব্লাষ্ট ছড়িয়েছে ব্রি ২৮ জাতের ধান। ধানা কাটার সময়ে শীষে চিটে ঝুলছে। মহাসংকট কাটাতে সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ঈদের ছুটি বাতিল করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
২০১৯ ও ২০২০ সালে করোনার বড় ধাক্কায় খুলনার কৃষক বোরোর ন্যায্য দাম পায়নি। ২১ ও ২২ সালে খানিকটা একই অবস্থা। গেল আমন মৌসুমের অধিকাংশ সময় যায় অনাবৃষ্টিতে। আমন বাঁচাতে সেচ যন্ত্র এবং পশ^বর্তী নদীর পানি ব্যবহার করতে হয়। চালের সংকট নিরসন করতে খুলনার কৃষক বোরো আবাদে নামে নভেম্বর থেকে। টানা ৬ মাস পর্যন্ত নানাভাবে এর পরিচর্যা করতে হয়। জেলায় ৬৩ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে এবার বোরোর আবাদ হয়েছে।
কৃষি অফিসের সূত্র বলেছে ২০ হেক্টর জমিতে ব্লাস্টের আক্রমণ হয়। যেসব এলাকায় ব্লাস্টে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি এলাকা ডুমুরিয়া উপজেলা, ৮ হেক্টর জমিতে। ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য উপজেলাগুলো হচ্ছে রূপসা, বটিয়াঘাটা, দিঘলিয়, ফুলতলা, তেরখাদা, দাকোপ, পাইকগাছ ও কয়রা। এসব এলাকায় ব্রি ২৮, ব্রি ৬৭, ব্রি ৬৩, ব্রি ৮১, ব্রি ৮৯, ব্রি ৯২, হিরা- ২ ও হিরা সূবর্ণ-৩। আক্রান্ত এলাকা বিশেষ করে ডুমুরিয়া, বটিয়াঘাটা, তেরখাদা ও রূপসা উপজেলার কৃষক উদ্বেগ ও উৎকন্ঠায় রয়েছেন।
রূপসা উপজেলা কৃষি অফিসার মো: ফরিদুজ্জামান উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে ব্লাস্ট ছাড়াও ব্যকটোরিয়াল লিফ ব্লাইট, ব্যকটোরিয়াল পেনিকেল ব্লাইট ও বাদামী গাছ ফড়িং বোরো ক্ষেতে আক্রমণ করে।
কৃষি সম্প্রসরণ অধিদপ্তর, খুলনার উপপরিচালক কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন তথ্য দিয়েছেন ব্লাস্ট প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সকল উপজেলা এখন নিয়ন্ত্রণে। ব্রি ২৮ জাত পরবর্তীতে ব্যবহার না করতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এ সংকটময় মুহুর্তে উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ঈদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
লবণচরা মেট্রো কৃষি অফিসার জেসমিন ফেরদৌস উপপরিচালকের কার্যালয়কে জানিয়েছেন মাঠের রোগবালাই দমনে ৩ সদস্যের স্কোয়ার্ড গঠন করা হয়েছে।
কয়রায় মহারাজপুর ইউনিয়নের কৃষক কামরুল ইসলাম জানান, ধান কাটার সময় শীষে চিটে দেখা যাচ্ছে। তিনি ব্রি ২৮ জাতের ধানের বীজ বপন করেন। সাড়ে ৩ বিঘা জমির আবাদে ৫৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেডি