খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৫৮

কুয়েট শিক্ষকের মৃত্যু ঘিরে রহস্যের জট, তদন্ত ক‌মি‌টি গঠন (ভিডিও)

নিজস্ব প্রতি‌বেদক

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে মারা গেছেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, হার্ট অ্যাটাকে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এদিকে, এ মৃত্যুকে ঘিরে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, তাঁর মৃত্যুর আগে তিনি লাঞ্ছনার শিকার হয়েছিলেন। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুত তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন কুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এবং লালন শাহ হলের প্রভোস্ট ছিলেন।

অভিযোগ উঠেছে—কুয়েট ছাত্রলীগের বেশ কয়েকটি অলিখিত উপদল রয়েছে। এর একটি প্রভাবশালী উপদল বর্তমান কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

সম্প্রতি কুয়েটের লালন শাহ হলের ডিসেম্বর মাসের খাদ্য ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) নির্বাচন নিয়ে সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান প্যানেলের বিরুদ্ধে নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রভাবিত করার প্রচেষ্টার অভিযোগ ওঠে। ওই প্যানেলের সদস্যেরা হলের প্রভোস্ট সেলিম হোসেনকে নিয়মিত হুমকি দিয়ে আসছিলেন তাঁদের মনোনীত প্রার্থীকে নির্বাচিত করার জন্য।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ ক্যাম্পাসের রাস্তা থেকে ড. সেলিম হোসেনকে জেরা করা শুরু করে। পরে তাঁকে অনুসরণের পর তাঁর ব্যক্তিগত কক্ষে (তড়িৎ প্রকৌশল ভবন) প্রবেশ করে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তাঁরা আনুমানিক আধা ঘণ্টা ড. সেলিম হোসেনের সঙ্গে রুদ্ধদার বৈঠক করেন।

পরে অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেন দুপুরে খাবারের জন্য বাসায় যান। এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে তাঁর স্ত্রী লক্ষ্য করেন, সেলিম হোসেন বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। এরপর দরজা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

শিক্ষক ও ছাত্ররা জানান, ড. সেলিম একজন অত্যন্ত সজ্জন, সৎ ও মেধাবী শিক্ষক ছিলেন। ছাত্রবান্ধব হিসেবে তাঁর যথেষ্ট সুনাম রয়েছে৷ ব্যক্তি জীবনে অত্যন্ত অল্প বয়সে তিনি দেশের বাইরে থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করে ২০২০ সালে অধ্যাপক পদোন্নতি পান৷ কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রতিক চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুতে আমরা স্তব্ধ হয়ে গেছি। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে এ ঘটনার তদন্ত করা হবে। এরপর ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। আমরা শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে আজ বুধবার একটি সভা ডেকেছি। শিক্ষকেরা কী ধরনের ভূমিকা নেবেন, ওই সভায় এ ব্যাপারে আলোচনা করা হবে।

কুয়েট ছাত্র কল্যাণ পরিষদের পরিচালক ড. ইসমাইল সাইফুল্লাহ বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে জানতে কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

কুয়েটের জনসংযোগ কর্মকর্তা মনোজ কুমার জানিয়েছেন, ড. রজিবুল আহসানকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুত তাদের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে, ড. সেলিম হোসেনের মৃত্যুতে কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!