১৩ সপ্তাহের সেমিস্টার কমিয়ে ১১ সপ্তাহ করা হয়েছে। ক্লাস, ল্যাব, কুইজ, এসাইনমেন্টের চাপে শিক্ষার্থীদের ঠিকমতো দম ফেলারও সুযোগ নেই। তারমধ্যেই খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল স্বাপ্নিক আঁকিয়ে মিলে গত ১ ও ২ জুলাই আয়োজন করে ফেলল এক চিত্রশিল্প প্রদর্শনীর।
প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের যান্ত্রিক পরিবেশের মধ্যে সপ্তাহান্তে এই চিত্রশিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল একটি আনন্দ ও স্বস্তির উপলক্ষ। চিত্রশিল্প প্রদর্শনীটির আয়োজক ছিল কুয়েট আর্টিস্ট সোসাইটি ‘কল্পপট’। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন ছাত্র কল্যাণ পরিষদের পরিচালক ইসমাইল সাইফুল্লাহ।
আয়োজনটিতে প্রদর্শিত হয়েছে কুয়েটের শিক্ষার্থীদের প্রায় ১৯৬টি চিত্রকর্ম এবং বেশ কিছু হস্ত ও কারুশিল্প। প্রদর্শনীতে চিত্রশিল্প দেখার জন্য কুয়েটের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ছাড়াও খুলনা শহর থেকে দর্শকদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্য করার মতো। প্রদর্শনী শেষে প্রায় ৫৫টি চিত্রশিল্প কিনে নেন দর্শকেরা।
কল্পপটের সাধারণ সম্পাদক, কুয়েটের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাদিয়া হাসান শ্রেয়া বলেন, ‘কুয়েটে আর্ট এক্সিবিশন আয়োজন করা আমাদের কাছে ছিল একটা স্বপ্নের মতো। পড়াশোনার বাইরেও আমাদের যে রঙিন একটা জীবন আছে, নিজস্ব কিছু শখ আছে তা সবাইকে দেখানোর স্বপ্ন দেখতাম প্রথম বর্ষ থেকেই। এত ভালো রেস্পন্স পাবো তা ভাবিনি।‘ তবে সেমিস্টারের শেষদিকে এসে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এই আয়োজন করা শিক্ষার্থীদের জন্য সহজ ছিল না। প্রশাসনের অনুমতি, আর্থিক সমন্বয়, ভিন্নধর্মী প্রচারণা, পড়াশোনার চাপের মধ্যে সবকিছুর আয়োজন করাটা ছিল বেশ চ্যালেঞ্জিং।
কল্পপটের সহ-সভাপতি হাসান শাহরিয়ার রাফি বলেন, ‘অনুষ্ঠানের একদিন আগে ডেকোরেটরের লোকেরা আসতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। হাতে সময় আছে শুধু একরাত। কি আর করা, জুনিয়রদের সাথে নিয়ে সারারাত না ঘুমিয়ে নিজেরাই দেয়ালে পেরেক মারা থেকে কাপড় লাগানো, ছবি ফ্রেমিং এর সব কাজ করতে শুরু করি। কল্পপটের সব মেম্বারদের ডেডিকেশনের কারণেই একটি সফল আয়োজন করা সম্ভব হয়েছে।‘
করোনা পরবর্তী সময়ে পড়াশোনার ব্যস্ততায় ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ দেখাটা দুষ্কর হয়ে উঠেছিল। ক্যাম্পাসের এই রঙিন রূপ দেখতে তাই ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে ছুটে এসেছেন কুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও। ভবিষ্যত ইঞ্জিনিয়ারদের ভেতরকার চিত্রশিল্পীদের উৎসাহিত করতে ও অনুপ্রেরণা জোগাতে শিক্ষকরাও এই প্রদর্শনীটিতে সক্রিয়ভাবে উপস্থিত ছিলেন।
সর্বোপরি, তরুণ শিক্ষার্থীদের নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি ও কল্পনা রঙ তুলির আঁচড়ে এঁকে মানুষের কাছে উপস্থাপনের প্রয়াসে আয়োজিত দু’দিনব্যাপি এই প্রদর্শনী সফলভাবে নিজের উদ্দেশ্য সাধনে সক্ষম হয়।
খুলনা গেজেট / আ হ আ