সাতক্ষীরার আশাশুনির কুড়িকাহুনিয়ায় বেড়িবাঁধ নির্মাণকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রায় ৩৫ হাজার জিও বস্তা আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত, দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দ্রুত বেড়িবাঁধের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী।
শনিবার (৩ জুন) বিকাল ৫ টায় প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাহুনিয়া লঞ্চঘাট এলাকায় বেড়িবাধের উপর নদী ভাঙনে বিপর্যস্ত প্রতাপনগর ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষের উদ্দোগে এই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, আকরাম হোসেন সানা, আবু আব্দুল্লাহ, মাওঃ আনিছুর রহামান, , ইউপি সদস্য শহিদুল্লাহ, বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ি জয়নাল আবেদিন, হাসান উল্লাহ প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জোয়ার ভাটার স্রোত ধারায় ও জলোচ্ছ্বাসে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে উপকুলের বেড়িবাঁধ। সম্প্রতি সময়ে
কুড়িকাহুনিয়া লঞ্চঘাট পয়েন্টে পউবো’র বেড়িবাঁধের ভাঙন রোধে সম্প্রতি ৬০ হাজার বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু মাত্র ২৫ হাজার বস্তা ডাম্পিং করা হয় এবং বাকী প্রায় ৩৫ হাজার জিওব্যাগ না ফেলেই কাজ শেষ ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সাতক্ষীরা বিভাগ-২ এর কর্মকর্তারা৷
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বেড়িবাঁধ নির্মাণে এসব অনিয়মের বিষয় জানতে চাইলে এই এলাকায় কাজের তদারকিতে দায়িত্বে থাকা পাউবো’র সেকশনাল অফিসার (এসও) আলমগীর হোসেন ও ঠিকাদারের লোকজন গ্রামবাসীর উপর চড়াও হয়ে তাদের সাথে খারাপ আচারন করেন। আমাদের নামে চাঁদাবাজীর মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দেয়া হয়। মূলত পাউবো’র কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের যোগসাজশে নিম্মমানের কাজ করায় বাঁেধর এই দুরাবস্থা।
বাঁধ নির্মাণে সরকারের পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকলেও তা সঠিকভাবে কাজে লাগানো হয় না। অসেক সময় ঠিকাদারের কাছ থেকে কাজ কিনে নিয়ে এসও নিজে লেবার সর্দ্দার দিয়ে যেনতেনভাবে কাজ সম্পন্ন করে থাকেন। যে কারনে বছর না ঘুরতেই বেড়িবাঁধ আগের মত হয়ে যায়। যার ফল ভোগ করতে হয় উপকুলবাসীর।
বক্তারা এসও আলমগীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ৭টি প্যাকেজের কাজের শুরতেই বারু ভর্তি বস্তা সেলাই করার পর ডাম্পিংয়ের জন্য লেবার সদ্দার ও স্থানীদের হিসাবে ৪৬৭০টি বস্তা গণনা করা হয়। অথচ এসও আলমগীর একই বস্তা গণনা কওে ৫০০২টি লিপিবদ্ধ করেন। গণনার এমন তারতম্যের বিষয়ে জানতে চাইলে এসও আলমগীর বেশি বাড়াবাড়ি করলে মামলা দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দেয়ার হুমকি দেন। এসময় বক্তারা স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ, ভাঙনরোধে কনক্রিটের ব্লক ডাম্পিং, লবনাক্তা হ্রাসে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ, ফসলের নিরাপত্তা ও কৃষক বাঁচানোর দাবি জানান।
এই অনিয়ম ও বড় পুকুর চুরির ঘটনা তদন্ত করে জড়িত কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা। এবিষয়ে দ্রুত পদক্ষে প্রগণে সরকারের উর্দ্ধতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন বক্তারা। এছাড়া কুড়িকাহুনিয়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে বাঁধ মেরামতেও গাফিলতির অভিযোগ তোলা হয় মানববন্ধন থেকে। একই সময়ে পাউবো’র ৭/২ নং পোল্ডারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সেকশনাল অফিসার) আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর সাথে দুর্ব্যবহার ও নানা হুমকিধমকি প্রদানের অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। এনিয়ে সরকারের উর্দ্ধতন মহলে অভিযোগ দেয়া হবে বলেও জানানো হয় মানববন্ধন থেকে।
মানববন্ধনে মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, শিক্সার্তী ও নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতপনগরের ভুক্তভোগী বিভিন্ন শ্রেনী পেশার শত শত মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।
খুলনা গেজেট/এসজেড