কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় আলমসাধু চালক ইমান আলী (৩৮) হত্যা মামলার চার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার (১০ নভেম্বর) দুপুরের দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পয়ারি গ্রামের পশ্চিম পাড়ার মোশারফ ওরফে মুসার ছেলে সুজন (৩৭), একই উপজেলার ধলসা গ্রামের ইলা বক্স মৃধার ছেলে মিল্লিক হোসেন (৩৫), পয়ারি গ্রামের শফিউদ্দীনের ছেলে শিপন (৩৮) এবং মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার তেতুলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল গনির ছেলে মান্নান ওরফে মানারুল (৩৫)।
রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সুজন ও মিল্লিক হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পরই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদেরকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মানারুল ও শিপন জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, যাত্রী বহনের উদ্দেশ্যে আলমসাধু গাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। তারপর ২০১২ সালের ১১ জানুয়ারি রাত থেকে নিখোঁজ হন আলমসাধু চালক ইমান আলী। পরদিন সকালে মিরপুর উপজেলার বুরাপাড়া ও পয়ারি গ্রামের মাঠে ইমান আলীর মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। আসামিরা তাকে জবাই করে হত্যা করে। খবর পেয়ে মিরপুর থানা পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১২ জানুয়ারি নিহতের বড় ভাই ইকমান আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন মিরপুর থানায়। হত্যাকাণ্ডে নিহত ইমান আলী মাজিহাট গ্রামের মৃত মহির উদ্দীন মন্ডলের ছেলে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুল করিম তদন্ত শেষে আসামির বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ২৫ মার্চ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ১০ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। এ মামলায় ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আজ বুধবার আদালত এ রায় দেন। রায় ঘোষণার পরই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সুজন ও মিল্লিককে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী বলেন, ইমান আলী হত্যা মামলায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় চার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মানারুল ও শিপন জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছে। অপর দুই আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএ