কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় মিলন হোসেন (২৪) নামে এক যুবকের ৮ টুকরো মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (৩ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার হরিপুর চর থেকে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা।
নিহত মিলন হোসেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পূর্ব বাহির মাদি এলাকার মাওলা বক্সের ছেলে। তিনি পড়ালেখার পাশাপাশি আউট সোর্সিংয়ের কাজ করত। গত ১০ মাস আগে তিনি বিয়ে করেছেন। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এলাকায় ঈদগাহের পাশে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, কী কারণে মিলনকে হত্যা করা হয়েছে। সে বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। সকালে শুনতে পারি, মিলনের ৪ টুকরো করা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক।
মিলনের স্ত্রী মিমি খাতুন বলেন, হাউজিং এলাকার সজল মিলনকে কল করে ডাকে। তার সঙ্গে দেখা করে বাসায় এসে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আবার বের হয়ে যায়। পরে সে নিখোঁজ ছিল। ওই দিনই কুষ্টিয়া মডেল থানায় জিডি করি। পরেরদিন দুপুর পর্যন্ত আমার স্বামীর মোবাইল নম্বর খোলা ছিল। কিন্তু পুলিশ গুরুত্ব দেয়নি, গুরুত্ব দিলে আমার স্বামীকে জীবিত উদ্ধার করতে পারতো। আজ সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
পুলিশ জানায়, দুইদিন আগে নিখোঁজ হন মিলন হোসেন। তার স্ত্রী কুষ্টিয়া মডেল থানায় এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেন। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ একটি মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে প্রথমে তিনজনকে আটক করে। আটকৃতরা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মিলনকে হত্যা করে হরিপুর এলাকায় পদ্মা নদীর চরে পুঁতে রাখার কথা স্বীকার করে পুলিশের কাছে।
পরে এ ঘটনায় আরও ২ জনকে আটকের পর শুক্রবার রাতে তাদের নিয়ে পদ্মা নদীর চরে মৃতদেহ উদ্ধারে যায় পুলিশ। ঘনকুয়াশার কারণে রাতে উদ্ধার সম্ভব হয়নি। শনিবার সকালে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। চাঁদা আদায়ের দাবিতে অপহরণের পর এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশ।
কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বলেন, টুকরো টুকরো করা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম