বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক বলেন, বিশ্বনবী (সা.)-এর আদর্শই সর্বোত্তম জীবনাদর্শ। আর পুরো কুরআনই রাসূল (সা.)-এর জীবন। তাই দেশ থেকে সকল অশান্তি দূর করতে হলে ঘরে ঘরে কুরআনের দাওয়াত সম্প্রসারণ করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সিরাত শেখাতে হবে। সে লক্ষ্যেই আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তিনি কুরআন-সুন্নাহভিত্তিক ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে। নগরীর দৌলতপুর থানা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সিরাতুন্নবী (সা.) আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
থানা আমীর ফোরকান উদ্দীন মিঠু এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা মহানগরীর আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও মহানগরীর সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলাল ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের খুলনা মহানগরী সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহানগরী জামায়াতের অফিস সেক্রেটারি মিম মিরাজ হোসাইন, কর্মপরিষদ সদস্য মুকাররম বিল্লাহ আনসারী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন খুলনা মহানগরী সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, আড়ংঘাটা থানা আমীর আশরাফ হোসেন, দৌলতপুর থানা সেক্রেটারি নিয়াজ আনসারী, সহকারী সেক্রেটারি মোশাররফ হোসেন আনসারী, থানা ওলামা বিভাগের সেক্রেটারি মাওলানা মাহদী হাসান, থানা অফিস সেক্রেটারি ডা. সাইফুজ্জামান, থানা সাংস্কৃতি সম্পাদক ডা. গোলাম কিবরিয়া, থানা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুল হক প্রমুখ।
প্রধান আরও বলেন, জীবনের সকল ক্ষেত্রে রাসূল (সা.) আমাদের প্রকৃত আদর্শ ও মানদন্ড। মানব জীবনের এমন কোন সমস্যা নেই যে সমস্যার সমাধান ইসলামে নেই। মূলত, রাসূল (সা.)-এর জীবন ছিল ঘটনাবহুল এবং চড়াই-উৎরাইয়ে পরিপূর্ণ। ছিল সংঘাতও। তাই মানবজীবনের সকল সমস্যার সমাধানে রাসূল (সা.)-এর সিরাত অধ্যয়ন ও তা যথাযথভাবে অনুসরণ করার কোন বিকল্প নেই। কিন্তু আমাদের দেশে রাসূল (সা.)-এর প্রকৃত সিরাত জানতে দেয়া হয় না। একটি কুচক্রীমহল রাসূল (সা.) জীবনাদর্শ ও সিরাতকে বিভক্ত করে ফেলেছে। তারা তার ব্যক্তিগত জীবন, ইবাদত বন্দেগী এবং সমাজ-রাষ্ট্রের ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রচষ্টাকে আলাদা করেছে। অথচ রাসূল (সা.)-এর আদর্শের মাধ্যমে মানুষের ব্যক্তিগত, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক জীবনসহ সকল সমস্যার সমাধান দিয়েছেন। মূলত, দেশের শিক্ষা কারিকুলামে রাসূল (সা.)-এর সিরাত অন্তর্ভূক্ত করা গেলে দেশ থেকে মানব রচিত সকল মতবাদের অপমৃত্যু ঘটবে এবং ন্যায়-ইনসাফভিত্তিক ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে। তিনি সেই স্বপ্নের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহবান জানান।
অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, ইসলাম মানেই শান্তি। যেখানে ইসলাম নেই সেখানে জুলুম-নির্যাতন সহ নানাবিধ অশান্তি মাথাচাঁরা দিয়ে ওঠে। জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটে। আর দোষ চাপানো হয় ইসলাম ও ইসলামী আদর্শ অনুসারীদের ওপর। মূলত, মানবরচিত কোন মতবাদই মানুষের জন্য কল্যাণকর নয়। কারণ, মানুষের তৈরি মতবাদ কখনো নির্ভূল হবে না। তাই কোন মুসলমানের মানবরচিত মতবাদ সহ্য করার কোন সুযোগ নেই। বস্তুুত অহীর বিধানই নির্ভূল বিধান। রাসূল (সা.) অহীর বিধান দিয়েই একটি ন্যায়-ইনসাফপূর্ণ কল্যাণমুখী সমাজ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। কিন্তু আমরা এমন এক কপাল পোড়া জাতি যে, আমাদের কোন সরকারই অহীর বিধান দিয়ে দেশ পরিচালনা করেনি। তারা ইসলামকে মসজিদ ও মাদরাসার মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছে। ফলে আমাদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি। তাই দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য জীবনের সকল ক্ষেত্রেই আমাদেরকে রাসূল (সা.)-এর সিরাত অনুসরণ করতে হবে। তিনি অহীর বিধানভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।