খুলনা, বাংলাদেশ | ৩রা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৬ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  ড. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক আজ, ইস্যু নির্বাচনের রোডম্যাপ

হলেই থাকবে শিক্ষার্থীরা, ভিসি পদত্যাগের এক দফায় রূপ নিল আন্দোলন

একরামুল হোসেন লিপু

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি আজ মঙ্গলবার দুপুর থেকে এক দফায় রূপান্তরিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সেই এক দফা দাবি হল বর্তমান ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগ।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বেলা দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে  ভিসি’র পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন ।

এদিকে ‍কুয়েটের ৬টি হলের তালা ভেঙে শিক্ষার্থীরা হলের ভেতরেই অবস্থান নিয়ে রয়েছেন। রাতে তারা হলেই অবস্থান করবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে  বলেন, কুয়েট ভিসি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, ভিসি ব্যর্থতার দায় নিতে অস্বীকার করেছেন, ভিসি পানির লাইন-ইন্টারনেট অফ করে দিয়ে হল থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়েছে, ভিসি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলার ইন্ধন দিয়েছেন, ভিসি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করেছে। সেহেতু আমরা ছয় দফা থেকে এক দফা দাবি ঘোষণা করছি।

এই ভিসিকে অপসারণ করা এখন আমাদের একমাত্র দাবি, একই সাথে নতুন ভিসির অধীনে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।

এর আগে, ঈদের পর  ১৩ এপ্রিল বন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবর্তনের ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা। এবং পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ওই দিন বিকালে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এবং শিক্ষার্থীরা রাত আটটার মধ্যে বন্ধ থাকা আবাসিক  হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে একটি লিখিত আবেদন দেয়।

কুয়েট কর্তৃপক্ষ তাদের আবেদনে সাড়া না দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে রাত্রি যাপন করে। পরের দিন ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলা নববর্ষের দিনও প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা দিনভর অবস্থান নেয়। এদিন রাত ৭ টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জরুরী সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করে। সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৮ ফেব্রুয়ারি সংগঠিত অনাকাঙ্খিত এবং অনভিব্রত ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়। একই সাথে  ৪ মে থেকে  বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষা কার্যক্রম শুরু এবং ২ মে সকল আবাসিক হলসমূহ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সিন্ডিকেটের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্বার বাংলা পাদদেশে একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে এবং বিভিন্ন বিভাগের সামনে গিয়ে আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার ব্যাপারে শিক্ষকদের সহযোগিতা কামনা করেন।

কিন্তু শিক্ষকদের কোন সাড়া না পেয়ে  শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় প্রেস ব্রিফিংয়ে ভিসির পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন।

এরপর তারা একে একে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি আবাসিক হলের তালা ভেঙ্গে ভেতর প্রবেশ করে।  সর্বশেষ আবাসিক হল গুলোতে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছে বলে জানা যায়।

উল্লেখ্য, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনার পর ২৫ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম ও আবাসিক হলগুলো বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

 

খুলনা গেজেট/তানভীর




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!