কুয়েট আজ পাঁচ মাস ধরে অচল হয়ে পড়ে আছে। প্রকাশ্যে হামলায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হলে তারা ভিসি অধ্যাপক ডঃ মাসুদ স্যারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। ভিসির অপসারণের মধ্যে সে আন্দোলন শেষ হয়।
দ্বিতীয়ত পর্যায়ে শিক্ষক সমিতি ধর্মঘট শুরু করে, যা এখনও চলমান। তাঁদের দাবি শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করতে হবে।কারণ তারা শিক্ষকদেরকে লাঞ্ছিত করেছে। পাঁচ মাসের আন্দোলনে শিক্ষক সমিতির অর্জন জিরো। সামনেও এর বেশি কিছু আশা করা যায় না।
মাঝখানে ক্ষতি হয়েছে অপরিমেয়, যা রিকভারি করা অসম্ভব। ধরে নিলাম কুয়েটে ৬০০০ শিক্ষার্থী আছে। ৬ মাস বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা ৬ মাস পিছিয়ে পড়েছে।
এ আন্দোলন না হলে তারা ৬ মাস আগে পাশ করে বের হতো এবং ৬ মাস আগে জব মার্কেটে প্রবেশ করতো। প্রত্যেক ছাত্রের যদি ৬ মাস করে সময় নষ্ট হয়, তাহলে ৬০০০ শিক্ষার্থীর (৬০০০×৬)=৩৬০০০ মাস সময় নষ্ট হয়েছে। এ সব শিক্ষার্থী যদি ৬ মাস আগে জবে প্রবেশ করতো এবং তাদের গড় বেতন যদি ৪০,০০০ টাকা হতো তাহলে (৪০০০০×৩৬০০০)= ১৪৪,০০,০০,০০০ (একশত চুয়াল্লিশ কোটি) টাকা পেত। অন্যদিকে অভিভাবকদের এখন অতিরিক্ত খরচ জোগান দিতে হবে।
প্রত্যেক ছাত্রের অভিভাবক যদি গড়ে প্রতিমাসে ১০,০০০ টাকা দেন, তাহলে (৩৬০০০ মাস× ১০০০০ = ৩৬,০০,০০,০০০ (ছত্রিশ কোটি) টাকা ।সব মিলিয়ে ১৮০,০০,০০,০০০ (একশত আশি কোটি )টাকা।
অন্যদিকে শিক্ষক, কর্মকর্তা,ও কর্মচারীদের বেতন বোনাস দিতে হবে। যদি ১০০০ স্টাফ থাকে এবং তাদের গড় বেতন যদি ৫০০০০ টাকা হয় তাহলে প্রতি মাসে সরকারের গচ্ছা দিতে হবে( ১০০০×৫০০০০) =৫,০০,০০,০০০ পাঁচ কোটি টাকা। ৬ মাসে গচ্ছা যাবে ৩০,০০,০০,০০০ (ত্রিশ কোটি) টাকা । এর বাইরেও আরো থাকতে পারে। (অনুমান করা ভুল হলে মাফ করবেন)
যুদ্ধের ময়দানে যে জয়লাভ করে সে হয় মুক্তিযুদ্ধা দেশপ্রেমিক। আর যে পরাজিত হয় সে যদি ন্যায়ের পক্ষেও থাকে তাহলে সে হয় রাজাকার, দেশদ্রোহী। যুদ্ধের দায় এবং ক্ষতিপূরণ তার উপর বর্তায়।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যেমন জার্মানির উপর, ইরাক যুদ্ধে সাদ্দামের উপর পড়েছিল। আমি জানি না এ দায় কার। তবে সরকারের দায় ও ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। আমি আশা করি সরকার, শিক্ষক, ছাত্র অভিভাবক সবাই এগিয়ে আসবেন এবং দ্রুত সমস্যার সমাধান বের করবেন।
লেখক : ভূক্তভোগী অভিভাবক ও সহকারী অধ্যাপক, কাদিরদী কলেজ, ফরিদপুর।
খুলনা গেজেট/এনএম