ঠিক এক আসর আগেই এই কুমিল্লার কাছে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। আরো একটি ফাইনাল, আরেকবার প্রতিপক্ষ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। যাদের কাছে বিপিএলের শিরোপা অনেকটা ডাল্ভাত। এই কুমিল্লাকেই এবার আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে মাঝারি রানে আটকে দিয়েছে ফরচুন বরিশাল। ডিফিন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লাকে থামিয়ে বিপিএলের মুকুট জিততে মাত্র ১৫৫ রান চাই তামিম ইকবালের বরিশালের।
সবমিলিয়ে পঞ্চম ও টানা তৃতীয় শিরোপা জয়ের আশায় আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ১৫৪ রান তুলেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৮ রান আসে মাইদুল ইসলাম অঙ্কনের ব্যাট থেকে।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস বরাবরই এক্স ফ্যাক্টর। টস জিতে বোলিং নিয়ে শতভাগ সফল দলগুলো। তাই তামিমও একই পথে হেঁটেছেন। বেছে নিয়েছেন বোলিং। আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা চ্যাম্পিয়ন সুল্ভ করতে পারেনি কুমিল্লা। প্রথম ওভারেই খায় বড় ধাক্কা। কাইল মায়ার্সের ফুলার লেন্থের বলে শট ফাইন লেগ দিয়ে উড়িয়ে মারেন সুনিল নারিন। সেখানে থাকা ফিল্ডার ম্যাকয় দুর্দান্ত ক্যাচে তা লুফে নিয়ে মাঠছাড়া করেন কুমিল্লার ওপেনারকে।
টুর্নামেন্টের শুরু থেকে দলের আস্থা হয়ে ছিলেন তাওহিদ। ফাইনালে পারলেন না জ্বলে উঠতে। থিতু হওয়ার আগেই জেমস ফুলারের বলে বিদায়। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে ফুলারকে থার্ড ম্যানে খেলতে গিয়ে মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ তুলে দেন তাওহিদ। ১০ বলে ১৫ রানের বেশি করতে পারেননি কুমিল্লার এই ব্যাটার।
বরিশালের পরের ছোবল লিটন দাস। গত ম্যাচের জয়ের নায়ককেও নিজের শিকার বানান ফুলার। তাওহিদের মতো একই ভুল করে বসেন লিটন। থার্ড ম্যান দিয়ে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন মাহমুদউল্লাহর হাতেই। ১২ বলে কুমিল্লার অধিনাইয়ক করেন ১৫।
৪২ রানে তিন উইকেট হারিয়ে যখন বিপাকে কুমিল্লা। তখন ম্যাকয় দিলেন আরেকটি ধাক্কা। এবার তুলে নিলেন জনসন চার্লসকে। আগেরবার ফাইনালে কুমিল্লার জয়ের নায়ক এবার করেন মোটে ১৫ রান। এরপর রান আউটে কাটা পড়েন কুমিল্লার আরেক বিদেশি মুখ মঈন আলি।
একের পর এক উইকেট হারানোর মিছিলে আশার আলো হয়ে জ্বলেছিলেন মাইদুল ইসলাম অঙ্কন। সতীর্থদের উইকেট হারানোর মিছিলে ছিলেন থিতু। শেষ দিকে নেমে সঙ্গ দেন স্বদেশি জাকের আলি অনিক। দুই তরুণে মিলে মেরামত করেন কুমিল্লার ইনিংস। থিতু হওয়া এই জুটি ভাঙেন সাইফউদ্দিন। মাইদুলের স্টাম্প ভেঙে উল্লাসে মাতেন। ৩৫ বলে ৩৮ রান করেন অঙ্কন। এরপর শেষ দিকে আন্দ্রে রাসেলের ঝোড়ো ইনিংসে মোটামুটি লড়াইয়ের পুঁজি পায় কুমিল্লা। ক্যারিয়বীয় তারকা শেষের দিকে করেন ২৭ রান। তার সঙ্গে থাকা জাকের করেন ২০ রান।
ফরচুন বরিশালের হয়ে বল হাতে ৪৩ রান দিয়ে দুটি উইকেট নেন জেমস ফুলার। ২৬ রান দিয়ে কাইল মায়ার্সের শিকার একটি। ম্যাকয়ও নিয়েছেন এক উইকেট। সাইফউদ্দিনও নেন একটি। তাইজুল ছিলেন উইকেট শূন্য।
ছয় সপ্তাহ ধরে চলতে থাকা টুর্নামেন্টের শেষ হবে আজ। মেগা ফাইনালের পর কে হাসবে শেষ হাসি? সেটার উত্তর মিলবে আর এক ইনিংস পর!
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স : ২০ ওভারে ১৫৪/৬ (লিটন ১৬,নারিন ৫, তাওহিদ ১৫, চার্লস ১৫, মাহিদুল ৩৮, মঈন ৩, জাকের ২০, রাসেল ২৭; মায়ার্স ৪-০-২৬-১, সাইফউদ্দিন ৪-০-৩৭-১, ফুলার ৪-০-৪৩-২, তাইজুল ৪-০-২০-০, ম্যাকয় ৪-০-২৪-১)।
খুলনা গেজেট/ এএজে