বাংলাদেশ থেকে কিরগিজস্তানে পাচার হয়ে যাওয়া ১৩ বাংলাদেশি দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন। নির্যাতনে শিকার এসব বাংলাদেশি বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। মানবপাচার নিয়ে কাজ করা রাইটস যশোর প্রেসক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থার নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক জানান, সৈয়দ মাহমুদুল হাসান মীর ও তার ভাই সৈয়দ শাহীন মীর নামে দুই দালাল ৬শ’ ইউএস ডলার বেতনে গার্মেন্টেসে চাকরি দেয়ার কথা বলে কুমিল্লার চান্দিনার শরিফুল ইসলাম, মুরাদনগরের আলমগীর হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, আবু মুসা ও জাহাঙ্গীর আলম, নরসিংদীর সামছুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গার নুরুজ্জামান ও বিপুল হোসেন, কুমিল্লার দেবীদ্বারের লিমন, মুরাদনগরের ওলিউল্লাহ, নারায়নগঞ্জ বন্দরের আমির হামজা, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের সজল মিয়া, কুমিল্লার বুড়িচংয়ের আসাদুজ্জামান ও ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মেহেদি হাসানসহ ১৪ জনকে কিরগিজস্তানে পাঠায়।
তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে সর্বনিম্ন তিন লাখ টাকা করে হাতিয়েছে কুমিল্লার জানগড় গ্রামের এই দু’ দালাল। বর্তমানে তারা থাকেন ঢাকার ২৬/৩০ গ্রিন রোডে।
কিরগিজস্তানে যাওয়ার পর গার্মেন্টেসে চাকরি দেয়ার কথা থাকলেও চাকরি দেয়া হয় ক্ষুদ্র একটি প্রতিষ্ঠানে। এখানে তাদের কাউকে কোনো বেতন দেয়া হয়নি। বেতন চাইলে উল্টো মারপিট করা হয়। ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকের কাছে কয়েকজনকে বিক্রি করে দেয় দালাল চক্র। বিষয়টি ওয়াসিস নামে সেখানকার একটি সংস্থা জানতে পেরে বাংলাদেশের রাইটস যশোরকে জানিয়েছে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের সজল মিয়ার মা ওহেদা খাতুন বাদী হয়ে মামলা করেছেন। পিবিআই ওই মামলা তদন্ত করছে। বিদেশ পাঠানো ১৪ জনের মধ্যে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মেহেদি হাসান কৌশলে দেশে ফিরে এসেছেন। এছাড়া, পাঁচজন কিরগিজস্তানের একটি শেল্টারহোমে রয়েছেন। বাকিরা এখনো পাচারকারী চক্রের হাতে বন্দি রয়েছেন। তারা বাংলাদেশে ফিরে আসার আকুতি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, পাচারের শিকার ১৩ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে রাইটস যশোরের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ সচিব, আইজিপি, তাসখানে নিযুক্ত বাংলাদেশের অ্যাম্বাসেডর, কিরগিজস্থানের কনস্যুলেটসহ সকল জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে পত্র দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই