খুলনা, বাংলাদেশ | ৩০ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  খুলনার বড় বাজারের পাটের বস্তার গোডাউনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস
  আজারবাইজানে কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলন শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

সংগীত পরিচালক আলী হোসেন আর নেই

বিনোদন ডেস্ক

উপমহাদেশের প্রখ্যাত সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলী হোসেন (৮১) আর নেই। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

আলী হোসেনের দীর্ঘদিনের সহকারী নাদিম আহমেদ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে তাঁর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন। ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলতে হচ্ছে – উপমহাদেশের প্রখ্যাত সুরকার আলী হোসেন আর আমাদের মাঝে নেই। কিছুক্ষণ আগে তিনি এই নশ্বর পৃথিবী ত্যাগ করে মহান স্রষ্টার কাছে নিজেকে সমর্পিত করার অনন্ত যাত্রায় শরিক হয়েছেন। আমি তার আত্মার মাগফেরাত কামনা ও তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করছি’।

এর আগে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় আলী হোসেনকে হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছিল। তিনি ফুসফুসের জটিলতায় ভুগছিলেন।

আলী হোসেনের হাতে সৃষ্টি হয়েছে কালজয়ী বহু বাংলা গান। যে তালিকায় রয়েছে- ‘কতো যে তোমাকে বেসেছি ভালো’, ‘অশ্রু দিয়ে লেখা এ গান যেন ভুলে যেও না’, ‘আরে ও প্রাণের রাজা তুমি যে আমার’, ‘এ আকাশকে সাক্ষী রেখে এ বাতাসকে সাক্ষী রেখে’, ‘ও দুটি নয়নে স্বপনে চয়নে নিজেরে যে ভুলে যায় তুলনা খুঁজে না পায়’, ‘কে তুমি এলে গো আমার এ জীবনে’সহ অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান।

১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ কুমিল্লায় আলী হোসেন জন্ম। বাবার চাকরির সুবাদে পাকিস্তানের করাচিতে তাকে পড়াশোনা করতে হয়েছিল। সেখানেই একসময় নজরুল একাডেমিতে সহকারী শিক্ষক হিসেবে আলী হোসেনের চাকরি হয়। নজরুল একাডেমিতে চাকরি করার সুবাদে একই প্রতিষ্ঠানের উচ্চাঙ্গ সংগীতের শিক্ষক পিয়ারে খানের কাছেও তিনি গান শিখেছেন। এভাবেই ধীরে ধীরে গানের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা।

১৯৬৬ সালে আলী হোসেনের সুর-সংগীতে নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র মোস্তাফিজ পরিচালিত ‘ডাক বাবু’ মুক্তি পায়। এই চলচ্চিত্রেই তিনি শাহনাজ রহমতুল্লাহকে দিয়ে ‘হলুদ বাটো মেন্দি বাটো’ গানটি করান। একই চলচ্চিত্রে গান করেন সৈয়দ আব্দুল হাদীও। শাহনাজ রহমতুল্লাহ ও সৈয়দ আব্দুল হাদীর তার হাত ধরেই চলচ্চিত্রের গানে অভিষেক ঘটে।

একই চলচ্চিত্রে আব্দুল হাদীর কণ্ঠে ছিল ‘চাতুরী জানে না মোর বধূয়া’। ‘ডাক বাবু’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন আজিম-সুজাতা। চলচ্চিত্রটি সে সময় বেশ দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছিল। গানগুলো জনপ্রিয় হওয়ার কারণে একজন সংগীত পরিচালক হিসেবেও আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি আলী হোসেনকে।

এরপর ঢাকায় বিভিন্ন বাংলা চলচ্চিত্রের কাজ করার পাশাপাশি উর্দু ‘ছোট সাহেব’, ‘দাগ’, ‘আনাড়ি’, ‘কুলি’ ইত্যাদি চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনার কাজ করেন আলী হোসেন। শতাধিক সিনেমায় সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন আলী হোসেন। কামাল আহমেদ পরিচালিত ‘ব্যথার দান’ চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সম্মানিত হন তিনি।

আলী হোসেনের স্ত্রী সালেহা খাতুন। একমাত্র ছেলে আসিফ হোসেন আমেরিকায় থাকেন। মৃত্যুর আগে তিনি ছেলের কাছেই ছিলেন বলে জানা যায়।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!