ভারতের মুসলিম তরুণদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে উসমানীয় সাম্রাজ্যের গৌরবময় উত্থানের সত্য কাহিনী অবলম্বনে নির্মিত জনপ্রিয় তুর্কি সিরিজ ‘দিরিলিস আরতুগ্রুল’।
কাশ্মীরসহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের মুসলমানদের মধ্যে তুরস্কের এ সিরিজটি ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এমনকি অধিকৃত উপত্যকাটিতে এখন নবজাতকদের ‘আরতুগ্রুল’ নাম রাখারও হিড়িক পড়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কাশ্মীরের সোপোর, পুলওয়ামা বা বারামুলাতে এর আগে কখনও ‘আরতুগ্রুল’ নামে কেউ ছিল না। অথচ গত দু’তিন বছরে এ উপত্যকায় যেসব শিশু জন্ম নিয়েছে তাদের অনেকেরই নাম রাখা হয়েছে ‘আরতুগ্রুল’।
এছাড়া শীতের মৌসুমে কাশ্মীরী তরুণদের আরতুগ্রুল স্টাইলের টুপিও পরতে দেখা যাচ্ছে । গাঢ় ওয়াইন-কালারের এ ধরনের মাথা ও কান-ঢাকা ফার বা পশমী টুপি তুরস্কে খুব জনপ্রিয় হলেও কাশ্মীরে এর কখনই কোনো প্রচলন ছিল না। কিন্তু জনপ্রিয় তুর্কি টেলি-ড্রামা ‘দিরিলিস: আরতুগ্রুল’ এখন সব পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে।
২০১৭ সালের অক্টোবরে নেটফ্লিক্স তুরস্কের এই ঐতিহাসিক ড্রামাটি অনলাইনে ‘স্ট্রিম’ করতে শুরু করার পরই ভারতে তা তুমুল সাড়া ফেলে।
হায়দরাবাদের মৌলানা আজাদ জাতীয় উর্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক শাহীদ মিও বিবিসিকে বলেন, কাশ্মীরে ইন্টারনেটের কী অবস্থা সবাই জানেন। আমি যখন কাশ্মীরী ছাত্রদের আজকাল অনলাইনে ক্লাস নিই, ব্যান্ডউইথের সমস্যায় তারা আমাকে ঠিকমতো শুনতেই পান না।
অথচ সেই একই ছাত্ররা আমাকে বলেন, আরতুগ্রুলের একটা এপিসোডও ছাড়া যাবে না। দুর্বল নেট নিয়েই, বাফারিং সহ্য করেই তারা হুমড়ি খেয়ে পড়েন মোবাইল ফোনে এই তুর্কি নাটক দেখার জন্য।
প্রসঙ্গত, দিরিলিস আরতুগ্রুলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এখন পর্যন্ত একাধিক মানুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশের একটি প্রজন্মও রীতিমতো ‘দিরিলিস’ জ্বরে কাঁপছে।
এছাড়া পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আদেশে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ‘পিটিভি’তে এই সিরিজ উর্দুতে সম্প্রচারিত হওয়ার পর থেকে পাকিস্তানেও ব্যাপক দিরিলিসভক্ত তৈরি হয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেএম