করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে চলছে ইসলামী ব্যাংক সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ শাখার ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি আদায়ের কাজ। ফলে অনেকেই বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপন করতে শুরু করেছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি ব্যাংক বর্হিভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের ঋনের কিস্তি পরিশোধের সময় তিন মাস বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি বছরের মার্চ মাসের ঋনের কিস্তি জুন মাস পর্যন্ত পরিশোধ করতে পারবে গ্রাহক। এসময় ঋন খেলাপী করা যাবে না। পাশাপাশি দন্ড, সুদ এবং অতিরিক্ত ফি চার্জ বা কমিশন আদায় করা যাবে না। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ঋন, লীজ, অগ্রিম শ্রেনী করণ সংক্রান্ত এক সার্কুলার জারী করেছে। এতে বলা হয়েছে মহামারী করোনা ভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব বিবেচনায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ শ্রেনী করণ বিষয়ে শিথিলতা আনা হয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলার বাজারগ্রামের মোমেনা খাতুন, জুলেখা খাতুন, হোসেনে আরা, মাছুরা ও আসমা খাতুন জানান, তারা ইসলামী ব্যাংক কালিগঞ্জ শাখা থেকে ভিন্ন অংকের টাকা এক বছর মেয়াদী ঋণ নিয়েছেন। কেন্দ্র হিসেবে তাদের পাড়ার আব্দুস সাত্তারের বাড়িতে ওই ব্যাংকের মাঠ কর্মী সপ্তাহে একদিন কিস্তির টাকা আদায় করতে আসেন। তারা নিয়ম অনুযায়ি টাকা পরিশোধও করে আসছিলেন। কিন্তু সরকারিভাবে গত দু’ সপ্তাহ যাবৎ লকডাউন ঘোষণা করায় তাদের মত খেটে খাওয়া মানুষের আয় বন্ধ হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তিন মাসের জন্য ঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়ায় তারা একটু স্বস্তিতে ছিলেন।
তারা আরো জানান, গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক, আশা, জাগরনী চক্র, সুশীলন, আহ্ছানিয়া মিশন সহ বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের চলমান কার্যক্রম বা আদায় বন্ধ রাখলেও দেশের ভাবমুর্তি নষ্ট করতে এবং সরকারকে জনগনের কাছে বিতর্কিত করতে ইসলামী ব্যাংক লিঃ কালিগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক নূর মোহাম্মাদ প্রজ্ঞাপনের দোহাই দিয়ে ব্যাংকের কর্মকর্তা, খলিলুর রহমান, মাঠকর্মী হাফিজুর রহমান সহ ব্যাংকের লোকজন দিয়ে বৃহষ্পতিবার (২২ এপ্রিল) সকাল ৮টা হতে তাদের বাড়ী বাড়ী যেয়ে মহিলা সদস্যদের ভয় ভীতি দেখিয়ে ঋণের কিস্তি জোরপূর্বক আদায় করেছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা।
কিস্তি আদায় করছেন কেন জানতে চাইলে ব্যাংক ম্যানেজার নূর মোহাম্মদ বলেন, প্রজ্ঞাপনে জোর করে টাকা আদায় করা যাবে না বলা হয়েছে। তাই তারা জোরপূর্বক টাকা আদায় করছেন না।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আগে কেউ তাকে জানায়নি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই