সাতক্ষীরায় বাগদা চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করার অভিযোগে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে এক অসাধু ব্যবসায়িকে জরিমানা ও বাগদা বিনষ্ট করিয়ে দেওয়ার অভিযোগে অপর এক ব্যাবসায়িকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। এ সময় ছিনতাই করা হয়েছে তার কাছে থাকা পৌনে ৫ লাখ টাকা। রোববার (১৬ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল ইউপি’র কুমারখালি কাঠের ব্রীজের উত্তর পাশে এ ঘটনা ঘটে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত ব্যবসায়ির নাম শান্তি রঞ্জন মিস্ত্রী । তিনি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কুমারখালি গ্রামের হরিদাস মিস্ত্রীর ছেলে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কুমারখালি গ্রামের শান্তিরঞ্জন মিস্ত্রী জানান, একই গ্রামের মনোরঞ্জন মিস্ত্রীর ছেলে আনন্দ মিস্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করে বাজারজাত করে আসছিল। গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর কালিগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত আনন্দ মিস্ত্রীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে। এসময় জব্দকৃত ৩০ কেজি পুশকৃত বাগদা চিংড়ি বিনষ্ট করা হয়। সিলগালা করা হয় তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এঘটনার পর থেকে আনন্দ মিস্ত্রী ও তার সহযোগিরা তার উপর ক্ষুব্ধ ছিল।
এরই ধারাবাহিকতায় ৮ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে আনন্দ মিস্ত্রী ও তার সহযোগীরা তার কাছে পুশকৃত চিংড়ি নষ্ট, জরিমানা করার খেশারৎ ও ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এক সপ্তাহের মধ্যে দাবিকৃত টাকা না দিলে তাকে খুন করার হুমকি দেওয়া হয়।
শান্তিরঞ্জন মিস্ত্রী আরও জানান, রোববার দুপুরে সাতক্ষীরা শহরের বাগদা ও গলদা রেনুর ব্যবসায়ি “অর্ণব ফিশ’ এর স্বত্বাধিকারী স্বপন কুমার মন্ডলের কাছ থেকে চার লাখ টাকা ও শহরের প্রধান ডাকঘর থেকে ৭৩ হাজার ৪৪০ টাকা তোলেন তিনি। এটাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুমারখালি কাঠের ব্রীজের কাছে পৌছালে আনন্দ মিস্ত্রী, বিশ্ব^জিৎ মিস্ত্রী, রামপদ তরফদার, মিলন তরফদার ও বিপ্লব সরকারসহ কয়েকজন তার মোটর সাইকেলের গতিরোধ করে। তারা লোহারড রড দিয়ে মাথায়, দুই হাতে, পায়ে, বুকে ও পিঠে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে তাকে জখম করে।
এসময় ছিনিয়ে নেওয়া হয় তার কাছে থাকা পৌনে পাঁচ লাখ টাকা। তার আত্মচিৎকারে পরিবারের সদস্য, স্থানীয় লোকজন ও পথচারিরা ছুঁটে আসায় হামলাকারি দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে ও পরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ সোমা দাস জানান, শান্তি রঞ্জন দাসের বাম হাতের অনামিকা আঙুল ভেঙে গেছে। এ ছাড়া তার মাথায়, ডান হাতের বাহুতে, ডান পায়ের উরুতে, ডান পায়ের প্যাটেলা, পিঠে ও কানে ভারী জিনিস ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হালিমুর রহমান বাবু জানান, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। তবে সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত এনিয়ে তার কাছে কোন লিখিত অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা করা হবে।