সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের নীলকণ্ঠপুর গ্রামের ভাটা শ্রমিক আবিদ হোসেন মোলা ওরফে বাবু হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত পুলিশ সদস্য আরিফ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক জিয়ারত আলীর সাত দিনের রিমান্ড আবেদন সোমবার শুনানী শেষে সাতক্ষীরা আমলী আদালত-২ এর বিচারক ইয়াসমিন নাহার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গ্রেপ্তারকৃত আরিফ হোসেন সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বন্দকাটি গ্রামের মৃত আরশাদ আলী মোড়লের ছেলে ও মাগুরা জেলার শালিখা থানাধীন হাজরাহাটি তদন্ত কেন্দ্রে পুলিশ কন্সটেবল হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, চলতি বছরের ৩ মার্চ কালিগঞ্জ উপজেলার বন্দকাটি গ্রামের আরশাদ আলী মোড়লের বিধাব মেয়ে দু’ সন্তানের জননী সাবিনাকে বিয়ে করে পাশ্ববর্তী নীলকণ্ঠপুর গ্রামের রহিম মোলার ছেলে আবিদ হোসেন মোলা ওরফে বাবু। বিয়ের পর বাবু শ্বশুর বাড়িতেই থাকতো। সম্প্রতি সাবিনা তার প্রয়াত সাবেক স্বামী ফারুকের ফুফাত ভাই লাভলুর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরই জের ধরে বর্তমান স্বামী বাবুর সঙ্গে সাবিনার বৈবাহিক সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে। এক পর্যায় কবিননামার দেড় লাখ টাকা দিয়ে বাবুকে তালাক দেয়ার কথা বলে আসছিল সাবিনা, তার পুলিশ সদস্য ভাই আরিফ হোসেনসহ পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু রাজি না হওয়ায় গত ৩ নভেম্বর ভোরে বাবুকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যার পর লাশ পাশ্ববর্তী পুকুরের পাশে লেবু গাছের ডালে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। সাবিনার ভাই পুলিশ সদস্য আরিফ গত ২৮ অক্টোবর থেকে ছয় দিনের ছুটিতে বাড়িতে ছিল।
এদিকে ছেলে হত্যার ঘটনায় ৩ নভেম্বর রাতে মা হোসনে আরা খাতুন বাদি হয়ে সাবিনা তার ভাই আরিফসহ ১০জনের নাম উলেখ করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সাবিনা ৪ নভেম্বর আদালতে বাবু হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে সে ভাই পুলিশ সদস্য আরিফসহ জড়িতদের নাম উলেখ করে। ৪ নভেম্বর আরিফকে তার কর্মস্থল থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক জিয়ারত আলী পুলিশ সদস্য আরিফকে গত ৫ নভেম্বর আদালতে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক অমল কুমার রায় পুলিশ সদস্য আরিফ হোসেনের দু’ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক জিয়ারত আলী বলেন, আদালতের আদেশ হাতে পাওয়ার পর বুধবার আরিফকে জেলখানা থেকে থানা হেফাজতে নিয়ে আসা হবে।
খুলনা গেজেট/কেএম