সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন দুই নারী প্রার্থী। নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়ে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক চেয়ারম্যানের মেয়ে সাফিয়া পারভীন ও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে লড়ছেন শ্যামলী রানী অধিকারী।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর থেকে তারা দু’জনেই এখন মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। আগামী ২৮ নভেম্বর ওই ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন মোশাররফ হোসেন। ২০১৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর রাতে কৃষ্ণনগর বাজারে একটি দোকানে বসে থাকা অবস্থায় সন্ত্রাসীদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হন তিনি। পরে ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে ওই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন নিহত মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আকলিমা খাতুন লাকি। তিনি সাতক্ষীরার নির্বাচিত প্রথম মহিলা ইউপি চেয়ারম্যান। বর্তমানে তিনিই কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন। আগামী ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ইউপি নির্বাচনে এই ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসাবে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ও বর্তমান চেয়ারম্যান আকলিমা খাতুন লাকি’র মেয়ে সাফিয়া পারভীন। তপসিল ঘোষনা হওয়ার পর মা ও মেয়ে দু’জনেই মনোনয়ন পত্র জমা দেন। মা আকলিমা খাতুন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ও মেয়ে সাফিয়া পারভীন জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসাবে। পরে মা তার মেয়েকে সমর্থন দিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন।
এদিকে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারি সাফিয়া পারভিন বলেন, আমি নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারলে আমার প্রয়াত বাবার স্বপ্ন পূরণে উদ্যোগী হব। একই সঙ্গে কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কর্মসংস্থান এবং নারী ও শিশুর স্বাস্থ্য ও পুষ্টি উন্নয়নে কাজ করে যাব। আমি সরকারকে আমার কাজের মাধ্যমে সব ধরনের সহায়তা দিতে চাই। তিনি সকলের দোয়া ও সমর্থন কামনা করেন।
অপরদিকে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হয়েছেন কৃষ্ণনগর ইউপি’র সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য শ্যামলী রানী অধিকারী। তিনি বলেন, আমি চাই প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে। নিজ এলাকার বহুমুখী উন্নয়ন করতে চাই। বিশেষ করে নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা ক্ষমতায়ন ও শিশুদের লেখাপড়া ও তাদের পুষ্টি উন্নয়নে আমি জোরালো ভূমিকা রাখতে চাই। তিনি সকালের আর্শিবাদ কামনা করেন।
এদিকে বর্তমান চেয়ারম্যান আকলিমা খাতুন লাকি প্রয়াত চেয়ারম্যানের স্ত্রী হিসেবে ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছেন। এলাকার উন্নয়ন কাজের ধারা অব্যাহত রাখতে তিনি লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী তার মেয়ে সাফিয়াকে ভোট প্রদানের জন্য ইউনিয়নের ভোটারদের প্রতি আহবান জানান।
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ২৬ হাজার। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে দুই নারী ছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আরও ছয়জন। এরা হলেন, রওশন আলী কাগজী, আব্দুর রহমান, নজরুল ইসলাম, জিএম রবিউল্লাহ বাহার, শাজাহান কবির ও আহসানুর রহমান।