ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাবন্দী লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ শেষে পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়। মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর প্রতিবাদে আজ সন্ধ্যা ৬টায় শাহবাগে মশাল মিছিল পালন করবেন তারা। আর সোমবার করবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও। আন্দোলনে নেতাকর্মীরা নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানান।
আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন তারা। অবরোধের ফলে শাহবাগের মূল সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে প্রতিবাদ সমাবেশ পালন করা হয়।
সেখান থেকে শাহবাগ মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেন তারা।
আন্দোলনে অংশ নেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, উদিচী, ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা।
এদিকে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) এক বিবৃতিতে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর বিষয়ে ‘বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ’র কাছে দ্রুত, স্বচ্ছ এবং স্বাধীন তদন্ত দাবি করেছে। সেই সাথে কারাবন্দী কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরের নিঃশর্ত মুক্তিও দাবি করেছে সংগঠনটি। কিশোর পুলিশি হেফাজতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে যে দাবি উঠেছে, তারও তদন্ত চায় বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা সংগঠনটি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মে মাস থেকেই মুশতাককে আটকে রাখা হয়েছিল উল্লেখ করে সিপিজে মুশতাকের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার বরাতে জানায়, তার সাথে কি ঘটেছিল এবং মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি। ২৩ তারিখেও মুশতাককে আদালতে হাজির করা হলে তিনি সুস্থ-ই ছিলেন।
সিপিজে’র এশিয়া বিষয়ক সিনিয়র গবেষক আলিয়া ইফতিখার বলেন, “বাংলাদেশের কারাগারে মুশতাক আহমেদের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে তাকে আটকানোই উচিত ছিল না।
তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যই মুশতাক আহমেদ কিভাবে মারা গেলেন তার তদন্তের অনুমতি দিতে হবে এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বারবার এবং অন্যায়ভাবে ব্যবহার করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে হবে।”
গণমাধ্যমের খবর, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এবং শুনানিতে হাজির মানবাধিকার কর্মী ও জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কের অফিসের কনসালট্যান্ট রেজাউর রহমান লেনিনের বক্তব্য থেকে সিপিজে জানায়, কারাগারে আটক কার্টুনিস্ট কিশোরের শারীরিক অবস্থাও ভালো নয়। শুনানিতে কিশোর তার ভাইকে জানান, পুলিশি হেফাজতে তার উপর গুরুতর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে যার ফলে তিনি পায়ে এবং কানে আঘাত পেয়ছেন, মেডিকেল সুবিধার অভাবে যেগুলো সংক্রমণে রূপ নিয়েছে।