নির্বাচনে জাতীয় পার্টির (জাপা) ভরাডুবির দায়িত্ব নিয়ে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হকের (চুন্নু) পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ করেছেন দলটির একদল নেতা–কর্মী। দলের পরাজিত কয়েকজন প্রার্থীর নেতৃত্বে এই নেতা–কর্মীরা আজ ঢাকায় দলীয় কার্যালয়ে এই বিক্ষোভ থেকে জাপার শীর্ষ দুই নেতাকে পদত্যাগের জন্য ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন।
জাপার বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা রাজধানীর বনানীতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বুধবার (১০ জানুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে চার ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা নির্বাচনে ব্যর্থতা ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। সে সময় পুলিশ দলটির কার্যালয় ঘিরে রাখে। বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীদের কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি।
দুপুরে বিক্ষোভে লিখিত বক্তব্য দেন জাপার অতিরিক্ত মহাসচিব সাহিদুর রহমান। তিনি দাবি করেন, দলের শীর্ষ নেতারা তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন। তিনি চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে জাতীয় পার্টিকে পারিবারিকীকরণ, মনোনয়ন–বাণিজ্য ও দুর্বল নেতৃত্বের অভিযোগ তোলেন।
লিখিত বক্তব্যে অতিরিক্ত মহাসচিব বলেন, নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ভরাডুবি হয়েছে। প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদের সঙ্গে চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের মতৈক্য ছিল না। দলকে বিভক্তির কবল থেকে রক্ষা করতে বেগম রওশন এরশাদ নির্বাচন থেকে দূরে সরে ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের গত চার বছর তাঁর সাংগঠনিক দুর্বলতা, রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা ও অদক্ষতায় দলকে ধ্বংসের শেষ প্রান্তে নিয়ে গেছেন। নির্বাচনে এর প্রতিফলন ঘটছে। জাতীয় পার্টির দুই শতাধিক প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন। সরকারের কাছে ধরনা দিয়ে মাত্র ২৬টি আসনে সমঝোতা করে নির্বাচনে গেলেও সেখানে ভরাডুবি হয়েছে। নেতা–কর্মীদের প্রত্যাশা ছিল, এই ব্যর্থতার দায় নিয়ে চেয়ারম্যান ও মহাসচিব তাঁদের সম্মান রক্ষা করে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন। কিন্তু তাঁদের বোধোদয় হয়নি। এখন দলের সর্বস্তরের নেতা–কর্মী তাঁদের অপসারণ চান।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এই পরিস্থিতিতে দলের ঐক্য বজায়ে রক্ষার স্বার্থে চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের পদত্যাগের পর জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি গঠন করা হবে।
এ সময় জাপা নেতা সৈয়দ আবু হোসেন, সফিকুল ইসলাম, জাহিরুল ইসলাম, লিয়াকত হোসেনসহ নির্বাচনে পরাজিত হওয়া নেতাদের অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/কেডি