ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ভারতীয় নৌবাহিনীর সাবেক ৮ কর্মকর্তার ফাঁসির সাজা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার। সর্বোচ্চ সাজার পরিবর্তে তারা এখন লঘু দণ্ডের মুখোমুখি হবেন বলে বৃহস্পতিবার ভারত সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তবে কাতারে কারাবন্দী ওই ভারতীয় কর্মকর্তারা কী ধরনের দণ্ডের মুখোমুখি হবেন সেই বিষয়ে এখন পর্যন্ত বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।
ভারতের ক্ষমতাসী বিজেপি সরকার বলেছে, পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আইনী দলের পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ করছে সরকার। ‘‘আমরা শুরু থেকেই তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। সাবেক নৌ কর্মকর্তাদের জন্য আমরা সব ধরনের কনস্যুলার এবং আইনি সহায়তা অব্যাহত রাখব। আমরা কাতারি কর্তৃপক্ষের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও চালিয়ে যাব।’’
কাতারে ইসরায়েলের পক্ষে গৃপ্তচরবৃত্তির দায়ে গ্রেপ্তারকৃত ভারতীয় নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা হলেন, পূর্ণেন্দু তিওয়ারি, সুগুনাকর পাকালা, অমিত নাগপাল এবং সঞ্জীব গুপ্ত। তারা ভারতীয় নৌবাহিনী কমান্ডার ছিলেন। এছাড়া বাকি চারজন হলেন ক্যাপ্টেন নাভতেজ সিং গিল, বীরেন্দ্র কুমার ভার্মা এবং সৌরভ বাসিস্ত। অন্যজন হলেন নাবিক রাজেশ গোপাকুমার।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে কয়েকজন অত্যন্ত প্রশিক্ষিত সামরিক কর্মী, যারা একসময় ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ পরিচালনা করতেন। কাতারের সশস্ত্র বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও সংশ্লিষ্ট পরিষেবা প্রদানকারী একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন তারা। এই সুযোগে তারা কাতারের সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন স্পর্শকাতর তথ্য ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর কাছে গোপনে সরবরাহ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তবে অভিযুক্ত আট নৌ কর্মকর্তার পরিবার গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পরিবারগুলো বলেছে, তারা ইসরায়েলের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তিতে জড়িত ছিলেন না। তারা কাতারি নৌবাহিনী এবং দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কাজ করেছিলেন। তারা কখনই গুপ্তচরবৃত্তি করতে পারে না। এই অভিযোগের কোনো প্রমাণ নেই…।
কাতারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এসব ভারতীয় ২০২২ সালের আগস্ট থেকে কারাবন্দী রয়েছেন। দেশটিতে চলতি বছরের মার্চে তাদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়। কারাবন্দী থাকা অবস্থায় একাধিকবার তাদের জামিনের আবেদন করা হয়। তবে সেসব আবেদন প্রত্যাখ্যান করে তাদের আটক রাখার সময় বৃদ্ধি করা হয়। গত ২৬ অক্টোবর ওই ভারতীয়দের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন কাতারের একটি আদালত।
সূত্র : এনডিটিভি
খুলনা গেজেট/ এএজে