কৃষকের বুক চিরে যেন হলুদভাব। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। ধান কেটে কৃষকেরা ঘরে তুলবেন। আনন্দের জোয়ারে ভাসছেন তারা। কার্তিক মাসের ১৭ দিন অতিবাহিত হয়েছে। ২০ দিন পর ধান কাটবেন কৃষকেরা।
গত দু’ বছর কারেন্ট পোকা নামক ভাইরাসের আক্রমণে ধানের ফলন তেমন ভালো হয়নি। লাভের মুখও দেখতে পায়নি কৃষকেরা। ঋণগ্রস্থ হয়েছিলেন। ভাইরাস বা পোকার সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তাদের ক্ষেতে থাকতে হচ্ছে প্রায় ১৮ ঘন্টা। ইরি আমন ধানের ফসল কাটবেন কৃষকেরা এ মাসের ২০ তারিখে। এ ধান কাটার পর অন্যজাতের ধান গাছ রোপণ করবেন তারা। তবে কৃষি অফিস নয় তথ্য প্রযুক্তির সহযোগীতায় ধান চাষ করছেন খুলনার কৃষকেরা।
হরিণটানা থানা এলাকার রিয়া বাজারের কৃষক মোঃ খানজাহান আলী জানান, গত দু’বছর কারেন্ট পোকায় ধান গাছের শীষ কেটে দিয়েছে। দু’বছর ধানের ফলন কম ছিল। লাভের মুখ দেখা যায়নি। ঋণী হয়েছেন এক লাখ টাকার মতো। কিন্তু এবার আল্লাহ’র রহমতে ধানের ফলন ভাল। আগের তুলনায় গাছ বেশ বড় হয়েছে। পাঁচ বিঘা জমি চাষ করেছেন। গত কয়েকবারের তুলনায় এবার ধানের পরিমাণ বেশ ভাল। ধানের ক্ষেত প্রস্তুত করা থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত তার ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
হরিণটানা থানার খাজুরতলা এলাকার আমীর মীর ২০ বিঘা জমি চাষ করেছেন। তিনি আশা করছেন, এবারে ১৬০ মণ ধান ঘরে তুলবেন। কিন্তু তার মনে একটাই টেনশন এই মুহুর্তে কোন ভাইরাসের সংক্রমণের শিকার না হয় গাছগুলো। তাছাড়া রয়েছে পোকার উপদ্রব। সেজন্য ভোর থেকে রাত পর্যন্ত ক্ষেতে থাকতে হচ্ছে। যাতে করে কোন সংক্রমণের শিকার না হয় গাছগুলো। তাছাড়া বীজ ধান ও কীটনাশকের দাম বেড়েছে। বিভিন্ন ভাইরাসে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ভারত থেকে বেশী দামে ঔষুধ এনেছেন তিনি।
বাটিয়াঘাটা উপজেলার সাচিবুনিয়া এলাকার কৃষক কালী ঠাকুর গোলদার জানান, কৃষি অফিস থেকে কোন প্রকার সাহায্য সহযোগীতা ছাড়াই চাষাবাদ করছেন। ইউটিউবের সহযোগীতায় এবার ৩০ বিঘা জমি চাষ করেছেন তিনি। কতটুকু জমিতে কী পরিমাণ ঔষুধ দিতে হবে তা জেনেছেন সেখান থেকে। বেড়েছে শ্রমিক ও বীজের দাম। আগে যেখানে পাঁচশ’ টাকার মধ্যে ধানের বীজ ক্রয় করতেন এখন তাকে সেটি ক্রয় করতে হয়েছে আটশ’ টাকায়। তার শুধু একটাই দুশ্চিন্তা যেন প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ দেখা না দেয়। এটি হলে তাদের সব শেষ হয়ে যাবে।
খুলনা গেজেট/এনএম