সাতক্ষীরার তালা ও কলারোয়ায় আসন্ন ইউপি নির্বাচনে বিভিন্ন ইউনিয়নে ক্ষমতাসীন আ’লীগ দলীয় প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণায় বাধা ও পোস্টার ছিড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার কলারোয়া উপজেলা দুইজন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা নির্বাচন অফিসার মনোরঞ্জন বিশ্বাসের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
কলারোয়া উপজেলার কয়লা ইউনিয়ন পরিষদের আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ আব্দুর রকিব মোল্লা ও একই ইউনিয়নের মোটরসাইকেল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ সোহেল রানা এই অভিযোগ করেন।
কয়লা ইউনিয়ন পরিষদের আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী রকিব মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, গত রাতে কে বা কারা ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডে ঝুলানো সমস্ত পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে। পোস্টার ছিড়ে ফেলায় নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হকে হচ্ছে। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাস্টার আসাদুল ইসলাম বিভিন্ন সময়ে আমাকে হুমকি ধামকি দিচ্ছেন। প্রকাশ্যে বলছেন, নৌকার প্রতীক ছাড়া ইউনিয়নে আর কোনো পোস্টার থাকবে না।
জেলা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি আরো বলেন, এতে নির্বাচনী আচরণ বিধি লংঘন হয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাই।
একই ইউনিয়নের মোটরসাইকেল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ সোহেল রানা অভিযোগ করে বলেন, নৌকার প্রার্থী আমার পোস্টার ছিড়ে ফেলেছে। ইউনিয়নের কোথাও আমার পোষ্টার রাখতে দিচ্ছে না। আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছে। প্রচার-প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাস্টার আসাদুল ইসলাম। এ ব্যাপারে নির্বাচন অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
এ বিষয়ে কলারোয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনোরঞ্জন বিশ্বাস জানান, ৩ নং কয়লা ইউনিয়নের আনারস প্রতীক ও মোটরসাইকেল প্রতীকের দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তারা অভিযোগে বলেছে কে-বা কারা তাদের পোস্টার ছিড়ে ফেলেছে। তারা কারোর নাম উল্লেখ করেননি। তবে খোঁজ খবর নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটার নগরঘাটা ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের হামলায় প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র প্রার্থীর স্ত্রী, ভাই, বোনসহ ৫ জন রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। শনিবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পাটকেলঘাটা থানায় মামলা হয়েছে।
আসন্ন নগরঘাটা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আনারস প্রতীকের জাহাঙ্গীর আলম জানান, শনিবার বিকালে রাইস মিল মোড় এলাকায় ব্যানার টাঙাচ্ছিলেন তার কর্মীরা। এসময় নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরজ্জামান লিপু তাদেরকে হটিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ পর গঙ্গারহাট মোড় এলাকায় কামরুজ্জামান লিপুর নেতৃত্ব অর্ধ-শতাধিক সস্ত্রাসী তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে লাটি ও রডের আঘাতে তার স্ত্রী নারগীস আক্তার, ভাই এনামুল সরদার, বোন সেলিনা খাতুন, চাচা সামাদ সরদার ও তার কর্মী কাপাসডাঙ্গা গ্রামের রবিউল ইসলামকে রক্তাক্ত জখম করে। তাদের মধ্যে স্ত্রী নারগীস আক্তার ও ভাই এনামুল সরদারের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া তাদের দু’টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয় বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম।
তবে হামলার বিষয় কামরুজ্জামান লিপু জানান, ৪০ থেকে ৫০টি মোটরসাইকেলে তারা নির্বাচনী প্রচারণায় ছিলেন। মোটরসাইকেলের বহরে গঙ্গারহাট মোড় এলাকায় পৌঁছালে জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির মহিলারা তাদের ওপর অনবরত ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে তার কর্মীরা তাদেরকে মার-ধর করে। তবে জাহাঙ্গীর আলমের পরিবারের সদস্যদের রক্তাক্ত জখমের কথা অস্বীকার করেন লিপু।
পাটকেলঘাটা থানার ওসি কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ জানান, জাহাঙ্গীর আলমের চাচা ইসহাক সরদার বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলা নং-১১। এবিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/এনএম