শরীরে করোনার উপস্থিতি খুঁজে বের করতে পারবে কুকুর! অবাক করা এ তথ্য জানিয়েছেন একদল মার্কিন গবেষক।ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ওই গবেষক দল ২০২১ সালের শেষের দিকে এ নিয়ে ব্যাপক গবেষণা শুরু করেন। দ্যা গার্ডিয়ানের।
এ গবেষণায় তারা দেখছেন, প্রশিক্ষিত কুকুর গন্ধ শুঁকে ৯৭.৫ শতাংশ ক্ষেত্রে নির্ভুলভাবে করোনা শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে।
গন্ধ শুঁকে বোমা ও মাদক চিনতে দীর্ঘদিন ধরে কুকুরের ব্যবহার হয়ে আসছে। নির্দিষ্ট ধরণের ক্যানসার, ডায়াবেটিস এবং এমনকি পারকিনসন্স রোগও শুঁকে চিহ্নিত করতে কুকুরের ব্যবহার করা হয়।
এই প্রক্রিয়ায় কোনও পরীক্ষা বা রাসায়নিক জড়িত থাকে না। কুকুরের কোনও জিনিস শুঁকে চিহ্নিত করার এই প্রক্রিয়াকে ‘বায়োডিটেকশন’ বলা হয়।
২০২০ সালে, করোনা মহামারি আঘাত হানার পরেই বিজ্ঞানী এবং বিশেষজ্ঞরা সার্স-কোভ-২ ভাইরাস শুঁকতে কুকুরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা। এবং প্রথম দিকেই সাফল্যের মুখ দেখেন তারা।
আমেরিকার ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন (এনসিবিআই) জানিয়েছে, কুকুর তাদের অত্যন্ত সংবেদনশীল ঘ্রাণশক্তির জন্য পরিচিত। যখন কেউ অসুস্থ হয়, তখন মানবদেহ নির্দিষ্ট উদ্বায়ী জৈব যৌগ নির্গত করে। যা গ্যাস হিসাবে নির্গত হয়।
প্রতি সংক্রমণে একটি নির্দিষ্ট গন্ধ থাকে। সুতরাং, যাদের শরীর থেকে কোভিড সংক্রামিত হওয়ার পরে নির্দিষ্ট উদ্বায়ী জৈব যৌগ নির্গত হয়, তাদের শরীর থেকে একটি স্বতন্ত্র গন্ধ বেরোয়। এই বিশেষ গন্ধটি ‘বায়োডিটেকশন’-এর মাধ্যমে চিহ্নিত করা যেতে পারে।
বিমানবন্দরগুলি এই শনাক্তকরণ পদ্ধতির জন্য আদর্শ জায়গায় পরিণত হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন বিমানবন্দরে এই প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
লেবানন, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ফিনল্যান্ডে এই প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা প্রথম শুরু হয়। ফিনল্যান্ড এবং লেবাননে পরিচালিত পরীক্ষাগুলির ক্ষেত্রে করোনা পজিটিভদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয় কুকুর।
আমেরিকার মায়ামি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৯৮ শতাংশ সাফল্য পাওয়া যায় বলেও এনসিবিআই জানিয়েছে ।
এর পর থেকেই করোনা চিনতে স্নিফিং কুকুর মোতায়েন করা জায়গার সংখ্যা বাড়ছে। দুবাইয়ের পুলিশ ৩৮টি স্নিফার কুকুরের একটি বিশেষ ইউনিট গঠন করেছে, যা ৯২ শতাংশ নির্ভুলভাবে মানুষের ঘামের নমুনা থেকে কোভিড শনাক্ত করতে পেরেছে বলে দাবি।