দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)-এ আক্রান্ত রোগী শনাক্তের সংখ্যা বেড়েছে। সঙ্গে মৃত্যুর হারও বেড়ে গেছে। তবে আগের দিনের চেয়ে শনাক্তের হার বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৩৬৪ জনের করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণ শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
দৈনিক সংক্রমণের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত পাঁচ দিনে করোনায় শনাক্তের সংখ্যা ১০ হাজার ৬৬৩ জন। সংক্রমিত ব্যক্তিদের মধ্যে মারা গেছেন ১৩২ জন। গত ১৫ নভেম্বর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত এই তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়। এর আগে গত ১০ নভেম্বর থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দিনে শনাক্তের সংখ্যা ৮ হাজার ৫৭৫ জন। মৃত্যু হয়েছে ৮১ জন সংক্রমিত ব্যক্তির। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী। দেশে এখন পর্যন্ত সংক্রমণ বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় আরও ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশে এখন পর্যন্ত মোট ৪ লাখ ৪১ হাজার ১৫৯ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৬ হাজার ৩০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৭২২ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮০ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণ শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ। গত এক সপ্তাহ ধরে শনাক্তের হার ছিল ১১ থেকে ১৩ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৭ হাজার ৫৩১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার সংখ্যা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত ১১ মে শনাক্তের হার ছিল ১২ দশমিক ০৮ শতাংশ। এরপর থেকে প্রতিদিনই শনাক্তের হার ছিল এর চেয়ে বেশি। গতকাল বুধবার দেশে ২ হাজার ১১১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর আগে দেশে গত সোমবার ৭১ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। সেদিন করোনা শনাক্ত হয়েছিল ২ হাজার ১৩৯ জনের। এরপর গত মঙ্গলবারও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুই হাজারের বেশি ছিল। মঙ্গলবার ২ হাজার ২১২ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। মাঝে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দেড় থেকে দুই হাজারের মধ্যে ছিল।
তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দৈনিক নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের যে তথ্য সরকার দিচ্ছে সেটি সংক্রমণের বাস্তবচিত্র নির্দেশ করছে না। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে টেস্টিং (পরীক্ষা), ট্রেসিং (সন্দেহভাজন রোগী শনাক্তকরণ), আইসোলেশন (বিচ্ছিন্নকরণ)-এগুলোর কোনোটিই দেশে সঠিকভাবে হচ্ছে না। লোকজনের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানা নিয়ে উদাসীনতা বেড়েছে। কোনো দেশে সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে কি না, তা বোঝার জন্য কিছু নির্দেশক নির্ধারণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তার একটি হলো টানা তিন সপ্তাহ ধরে মৃত্যু কমতে থাকা। কিন্তু বাংলাদেশে টানা মৃত্যু কমতে দেখা যাচ্ছে না।
খুলনা গেজেট / এআর