করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে হাসপাতলে করোনা রোগীর লাশ গ্রহণ করতে আসেনি মৃতের পরিবার। সৎকার করতে না পারায় উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পড়েছিল লাশটি পুরো ১২ ঘন্টা। খবর পেয়ে রামপালের খেদমতে খালফ নামের মুসলিম স্বেচ্ছাসেবী টিমের চার সদস্য মাওলানা হোসাইন আহমদ, মাওলানা জুলফিকার আলী, আব্দুর রহমান ও দেলোয়ার হোসাইন মৃত হিন্দু ব্যক্তির সৎকারের কাজটি সম্পন্ন করে ।
ঘটনাটি বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় । বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর মুসলিম ঐ চার ব্যক্তিকে অভিনন্দন জানিয়েছে এলাকাবাসী ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রামপাল উপজেলার বেতকাটা গ্রামের নিরোদ পাল (৬৫) এক সপ্তাহ আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার পরিবারের সদস্যরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে ৷ তখন কোভিড টেস্ট করলে তার করোনা শনাক্ত হয় ৷ মৃত্যুর আগে এক সপ্তাহ ধরে তিনি হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন ৷ মঙ্গলবার (১৫ জুন) রাতে তার মারা যাওয়ার খবর পেয়েও তার পরিবারের কোন সদস্য তাকে সৎকার করতে আসেনি। পরে রামপাল স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ওই মুসলিম স্বেচ্ছাসেবী টিমকে খবর দিলে পরদিন সকালে (১২ ঘণ্টা পর) তারা লাশটি নিয়ে সৎকারের কাজ সম্পন্ন করেন ।
খেদমতে খালফ নামের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের টিম লিডার মাওলানা হোসাইন আহমদ জানান, “হাসপাতাল থেকে মঙ্গলবার রাতেই আমাদেরকে জানানো হলে আমরা পরদিন (বুধবার) সকালে লাশটি বের করে নিজেরাই ভ্যান ঠিক করে মিরাখালী শ্মশানে নিয়ে আসি। শুধুমাত্র মুখাগ্নি করার জন্য তার ছেলে উপস্থিত ছিল, কিন্তু সে তার বাবাকে ধরেনি, বা স্পর্শ করেনি। বেলা সাড়ে ১১টায় পুরো কাজটা আমরা চারজনই সম্পন্ন করি ।”
রামপাল সদরের ইউপি সদস্য মিকাইল হোসেন বলেন, করোনাকালিন এ ধরনের উদার মানসিকতা এক অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। এর মাধ্যমে এলাকার যুবকরা অনুপ্রাণিত হবে। এমনকি তিনি নিজেকেও এই মহৎ কাজে প্রয়োজনে শামীল করবেন বলে জানান ।
খেদমতে খালফ টিমের চার সদস্য মাওলানা হোসাইন আহমদ, মাওলানা জুলফিকার আলী, আব্দুর রহমান ও দেলোয়ার হোসাইন মানবিকতা এবং অসাম্প্রদায়িকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শুকান্ত কুমার পাল তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
খুলনা গেজেট/এমএম