মঙ্গলবারের পর বুধবারেও বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঊর্ধ্বহার লক্ষ্য করা গেছে। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়াসহ কয়েকটি দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে।
বুধবার বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৩৩৪ জন এবং মারা গেছেন ৯ হাজার ১০৯ জন। আগের দিন মঙ্গলবার নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৬৫ জন এবং এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন ৮ হাজার ৬৮১ জন।
তার আগের দিন সোমবার বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ২৫৫ জন এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ৬৭১ জন।
বুধবার করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে ব্রাজিলে। দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম এই দেশটিতে এই দিন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৫ হাজার ৮৬১ জন এবং মারা গেছেন ২ হাজার ৬৭৩ জন।
এই তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে বুধবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৭ হাজার ২৯৪ জন এবং মারা গেছেন ১ হাজার ৪১১ জন।
করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃতের হিসেবে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে আছে যথাক্রমে দক্ষিণ আমেরিকার দুই দেশ আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়া। বুধবার আর্জেন্টিনায় নতুন আক্রান্ত করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার ৮৭৮ জন এবং এ রোগে দেশটিতে এদিন মারা গেছেন ৬৪৬ জন।
আর্জেন্টিনার তুলনায় আক্রান্ত কিছুটা বেশি হলেও মৃত্যু কম হয়েছে কলম্বিয়ায়। বুধবার দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ হাজার ৮২৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৫৯৫ জন করোনা রোগীর।
গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বের আরও যেসব দেশে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের উচ্চহার দেখা গেছে সেগুলো হলো- রাশিয়া (আক্রান্ত ১৩ হাজার ৩৯৭, মৃত্যু ৩৯৬), যুক্তরাষ্ট্র (আক্রান্ত ১৩ হাজার ৭৩৪, মৃত্যু ৪২৮), ইরান (আক্রান্ত ১০ হাজার ৪৮৭, মৃ্ত্যু ১২৯), দক্ষিন আফ্রিকা (আক্রান্ত ১৩ হাজার ২৪৬, মৃত্যু ১৩৬), ইন্দোনেশিয়া (আক্রান্ত ৯ হাজার ৯৪৪, মৃত্যু ১৯৬), যুক্তরাজ্য (আক্রান্ত ৯ হাজার ৫৫, মৃত্যু ৯) ও তুরস্ক (আক্রান্ত ৬ হাজার২২১ , মৃত্যু ৭১)।
বিশ্বজুড়ে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা বর্তমানে ১ কোটি ১৬ লাখ ৫৪ হাজার ২৭৯ জন। এদের মধ্যে করোনার মৃদু উপসর্গ বহন করে চলছেন ১ কোটি ১৫ লাখ ৭১ হাজার ২০০ জন এবং গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আছেন ৮৩ হাজার ৭৯ জন।
মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৭ কোটি ৭৭ লাখ ৮৭ হাজার ১৬২ জন এবং এ রোগে মারা গেছেন মোট ৩৮ লাখ ৪৮ হাজার ১৫৭ জন।
তবে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাও কম নয়। বিশ্বে এ পর্যন্ত ১৬ কোটি ২২ লাখ ৮৪ হাজার ৭২৬ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৪ লাখ ৫২ হাজার ২৯৪ জন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম সার্স-কোভ-২ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। পরে সাধারণভাবে এই ভাইরাসটি পরিচিতি পায় নতুন বা নভেল করোনাভাইরাস নামে। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছে উহানেই। চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে তখন জানানো হয়েছিল, ‘অপরিচিত ধরনের নিউমোনিয়ায়’ আক্রান্ত হয়ে ওই ব্যক্তি মারা গেছেন।
এরপর খুব অল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসের উপস্থিতি দেখা যাওয়ায় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায় অবশেষে ওই বছর ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি ঘোষণা ডব্লিউএইচও।