চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় দেড় হাজার মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৫ লাখে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে জাপানে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্রাজিল। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, দক্ষিণ কোরিয়া ও হংকং। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৬ কোটি ৩২ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৬ লাখ ৯১ হাজার।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৪৭৭ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে পাঁচ শতাধিক। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৬ লাখ ৯১ হাজার ৩৫ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৬৫৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৬০ হাজারের বেশি। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬ কোটি ৩২ লাখ ৫ হাজার ৭২২ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে জাপানে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ১৬ হাজার ২১৯ জন এবং মারা গেছেন ৪১৫ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৮৭ লাখ ৬৪ হাজার ২২৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৫৬ হাজার ২২৮ জন মারা গেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ১৫৫ জন এবং মারা গেছেন ২১৮ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১০ কোটি ২৩ লাখ ৬১ হাজার ৯৭৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১১ লাখ ১৬ হাজার ৯৬১ জন মারা গেছেন। একইসময়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৭ হাজার ৫১৭ জন এবং মারা গেছেন ৬৯ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে চতুর্থ ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৩৭ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৩৭ হাজার ১০৪ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৬২ লাখ ৭৫ হাজার ১৪৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৯৩ হাজার ৬০৪ জনের।
ফ্রান্সে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৬ হাজার ৮১ জন এবং মারা গেছেন ১৪০ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ৯২ লাখ ৪৫ হাজার ৯৩৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৬১ হাজার ৭১৫ জন মারা গেছেন। একইসময়ে হাঙ্গেরিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৩৯৭ জন এবং মারা গেছেন ৫৬ জন।
রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৬ হাজার ২০২ জন এবং মারা গেছেন ৫৬ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ১৭ লাখ ৮১ হাজার ২৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৫৪৮ জনের। একইসময়ে ফিলিপাইনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৫৭ জন এবং মারা গেছেন ২৬ জন।
তাইওয়ানে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ২৮ হাজার ১৬৮ জন এবং মারা গেছেন ২৫ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৮৭ লাখ ৬৬ হাজার ২৭২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৫ হাজার ১৪৫ জনের। একইসময়ে হংকংয়ে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২০ হাজার ৮৬৫ জন এবং মারা গেছেন ৫৯ জন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।