ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপরাষ্ট্র কমোরসের প্রেসিডেন্টের ওপর ছুরি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে দেশটির প্রেসিডেন্ট সামান্য আহত হয়েছেন। এদিকে ছুরি হামলা চালানোর দায়ে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে সেলে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
হামলার একদিন পর তার মৃত্যু হয়। অবশ্য তার মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। গত শুক্রবার কমোরসের প্রেসিডেন্টের ওপর ছুরি হামলার এই ঘটনা ঘটে। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার কমোরসের প্রেসিডেন্টকে ছুরি দিয়ে আক্রমণ করার জন্য গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে সেলের ভেতরে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে সেখানকার কর্তৃপক্ষ বলছে।
একজন সুপরিচিত ধর্মীয় নেতার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে এবং এতে প্রেসিডেন্ট আজালি আসুমানি তার হাতে আঘাত পেয়ে আহত হন।
জাতীয় প্রসিকিউটর আলি মোহাম্মাদ জোনায়েদ বলেছেন, গ্রেপ্তারের পর আক্রমণকারীকে শান্ত করার জন্য একটি কক্ষে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রাখা হয়েছিল। তিনি জানান, শনিবার সকালে সেলের মেঝেতে প্রাণহীন লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
ভারত মহাসাগরীয় এই দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী মোরোনিতে এক সংবাদ সম্মেলনে জোনায়েদ বলেন, ‘একজন ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেছেন। তার মৃত্যুর কারণ নির্ধারণের জন্য তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’
এদিকে কমোরসের জ্বালানিমন্ত্রী আবুবাকার সাঈদ আনলিকে উদ্ধৃত করে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, হামলার শিকার ৬৫ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট ‘ভালো আছেন। তার কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা নেই, তিনি বিপদমুক্ত। কয়েকটি সেলাই দেওয়া হয়েছে’।
বিবিসি বলছে, শনিবারের এই সংবাদ সম্মেলনেও জ্বালানিমন্ত্রী আবুবাকার সাঈদও ছিলেন। এর পাশাপাশি সেখানে সরকারের প্রায় সব মন্ত্রীই উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার বিকেলের হওয়া এই হামলার উদ্দেশ্য পরিষ্কার না হলেও কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। এএফপির খবরে বলা হয়েছে, তারা ছুরিধারীকে আহমেদ আবদু নামে একজন ২৪ বছর বয়সী সৈনিক হিসেবে শনাক্ত করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা এএফপিকে বলেছেন, তারা ওই ব্যক্তিকে সেই ঘরে দেখেছেন যেখানে শুভাকাঙ্ক্ষীরা মৃত ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছিলেন। তারা বলেছেন, হামলাকারীর ছুরিকাঘাত প্রেসিডেন্টের হাতে জখম সৃষ্টি করে।
প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট আজালি প্রথম ১৯৯৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন। এক দশক ক্ষমতায় থাকার পর তিনি ২০১৬ সালে বিতর্কিত নির্বাচনে জয়ী হন এবং গত জানুয়ারিতে পুনরায় নির্বাচিত হন।
নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ রয়েছে এবং এরপরে দুই দিনের মারাত্মক বিক্ষোভ হয়েছিল দেশটিতে। এছাড়া আজালির বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদের অভিযোগও রয়েছে।
তিনি ২০২৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
খুলনা গেজেট/এএজে