প্রক্রিয়াজাত খাবারে ভেজালের পরিমাণ বৃদ্ধি— এসব কিছুরই প্রভাব পড়ছে সার্বিক স্বাস্থ্যে। আগের থেকেও বেশি দ্রুত বুড়িয়ে যাচ্ছেন মানুষ। তাই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশি বেশি করে কফি খান। কারণ কফিতে আয়ু বাড়তে পারে দুই বছর। এবং হার্টের অসুখসহ বিভিন্ন রোগ দূরে রাখার প্রমাণ পাওয়া গেছে কফিতে।
একটি গবেষণা সূত্রে জানা গেছে, নিয়মিত কফি খেলে প্রায় দুই বছর পর্যন্ত বাড়তে পারে আপনার আয়ু। গবেষণায় আরও বলা হচ্ছে— দুই বছরের ওই আয়ু হবে রোগবর্জিত। অর্থাৎ কেবল বেঁচে থাকা নয়, সুস্থভাবে বেঁচে থাকা।
কফি নিয়ে পুরোনো একটি গবেষণার ফল যাচাই করার জন্য নতুন করে গবেষণা শুরু করেছিল ইউরোপের পর্তুগালের কোয়েম্বারা বিশ্ববিদ্যালয়। সেই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে এজিং রিসার্চ রিভিউ নামের একটি পত্রিকায়। সেখানে বলা হয়েছে— নিয়মিত কফি খেলে মানুষের গড় আয়ু নিদেনপক্ষে ১.৮ বছর বাড়তে পারে।
পর্তুগালের গবেষক রডরিগো কুনহাও সেই কথা বলেছেন। তিনি বলেন, আমরা এখন আগের থেকেও দ্রুত বুড়িয়ে যাচ্ছি। তাই আমরা কী খাচ্ছি, তার ওপর গুরুত্ব দেওয়াটা এখন আরও বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে। আমাদের এখন এমন খাবার খুঁজে বার করতে হবে, যাতে শুধু আমাদের আয়ু বাড়বে না, স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।
গবেষণা বলছে, কফিতে আছে দুই হাজারেরও বেশি সম্ভাব্য বায়োঅ্যাকটিভ উপাদান। তার মধ্যে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে বিভিন্ন প্রদাহ প্রতিরোধক উপাদানও, যা মানবদেহের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রদাহমুক্ত রাখে, ইনসুলিনের কার্যক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করে। গবেষক কুনহা বলছেন, সাধারণত বয়সের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়া বা জৈবক্রিয়ার অবনতি হতে শুরু করে। যেটা হলে নানা রকম স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেয়। এমনকি হার্টের রোগ, কিডনির সমস্যার মতো কোমর্বিডিটিও তৈরি হতে পারে।
কিন্তু আমাদের গবেষণা দেখিয়েছেন, কীভাবে প্রতি দিন নির্দিষ্ট পরিমাণে কফি সেবন করলে তা আমাদের জৈবক্রিয়া সতেজ রাখতে সাহায্য করে। গবেষণাপত্রটির লেখক তার প্রতিবেদনে জানাচ্ছেন, কফিতে বার্ধক্য-রোধক গুণাগুণ রয়েছে। যে যে কারণে আমাদের শরীরের বয়স বাড়ে, যেমন কোষের পরিবর্তন, জিনগত স্থিতিশীলতা নষ্ট হওয়া— ওই সব কিছুকেই প্রভাবিত করতে পারে কফি।
কুনহা বলছেন, আমরা সাধারণত দেখি প্রবীণদের বেশি বয়সে ক্যাফিন বা কফির সেবন কমাতে বলা হচ্ছে। কিন্তু নতুন গবেষণার নিরিখে বলতে পারি— সেই উপদেশকে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। তবে কফি ঠিক কীভাবে এবং কতটা পরিমাণে স্বাস্থ্যকর আয়ুবৃদ্ধিতে সাহায্য করে তার নিখুঁত হদিস এখনো দিতে পারেননি গবেষকরা। তার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন বলে মনে করছেন পর্তুগালের গবেষকরা।
খুলনা গেজেট/এনএম