আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর এ বার রাশিয়া। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে পহেলগাঁও কাণ্ড নিয়ে কথা বললেন রুশ বিদেশমন্ত্রী সার্জেই লাভরভ। শুক্রবার দুই বিদেশমন্ত্রীর কথা হয়েছে ফোনে। জয়শঙ্করকে ফোন করে আলোচনার মাধ্যমে পাকিস্তানের সঙ্গে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন লাভরভ। মনে করিয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত শিমলা চুক্তি এবং লাহোর ঘোষণার কথা। ঘটনাচক্রে, এই রাশিয়াই গত তিন বছরের বেশি সময় ধরে প্রতিবেশী ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে রত।
লাভরভ এবং জয়শঙ্করের ফোনালাপের পর রাশিয়ার দূতাবাস থেকে একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘‘ভারতের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে ভারত এবং রাশিয়ার পারস্পরিক সহযোগিতা সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে রুশ বিদেশমন্ত্রীর। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্কের অবনতি প্রসঙ্গেও তাঁরা কথা বলেছেন। ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তি এবং ১৯৯৯ সালের লাহোর ঘোষণার শর্ত অনুযায়ী দ্বিপাক্ষিক কূটনীতির ভিত্তিতে নয়াদিল্লি এবং ইসলামাবাদের মধ্যে মতবিরোধের সমাধান চেয়েছেন লাভরভ।’’
পরে জয়শঙ্করও রুশ মন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপের কথা সমাজমাধ্যমে জানান। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘‘পহেলগাঁও হামলা নিয়ে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী লাভরভের সঙ্গে কথা হল। এই ঘটনার দোষী, সমর্থক এবং পরিকল্পনাকারীদের শাস্তি পেতেই হবে। আমরা দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতামূলক কার্যকলাপ নিয়েও আলোচনা করেছি।’’
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করা হয়েছে। তার পাল্টা হিসাবে পাকিস্তানও একাধিক পদক্ষেপ করে। ভারতের সঙ্গে শিমলা চুক্তি স্থগিত করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিল তারা। এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হয়ে চলেছে দিনের পর দিন। আমেরিকা পহেলগাঁওয়ের ঘটনার নিন্দা করেছে। তবে দুই দেশকেই সংযত হওয়ার এবং আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজার বার্তা দিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিও দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং উত্তেজনা প্রশমনের অনুরোধ করেছেন। একই ভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভারত এবং পাকিস্তানকে কূটনৈতিক পথে সমাধান এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার বার্তা দিয়েছে। চিনও পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রীকে ফোন করে একই বার্তা দিয়েছিল। সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করলেও ভারত এবং পাকিস্তানের উত্তেজনা কূটনৈতিক পথে প্রশমনের আবেদন জানাচ্ছেন সকলেই।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পূর্ব ইউরোপে যুদ্ধ চলছে। রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সেই যুদ্ধ থামাতে হিমশিম খাচ্ছে আমেরিকা। কোনও পরিস্থিতিতেই দুই দেশের সমঝোতা হচ্ছে না। সেই রাশিয়াই যুদ্ধ এড়ানোর পরামর্শ দিল ভারত এবং পাকিস্তানকে।
খুলনা গেজেট/এএজে