খুলনার পাইকগাছায় গৃহবধূকে (৪৫) ধর্ষণ ও স্বর্ণের কানের দুল লুটের অভিযোগের ঘটনায় এখনও মামলা দায়ের করা হয়নি। একইসঙ্গে ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৭টা পাইকগাছা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুর রহমান বলেন, ওই ঘটনায় এখনও মামলা দায়ের করা হয়নি। ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা মামলা করতে থানায় এসেছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
এর আগে সোমবার (সকালে) ওই গৃহবধূর প্রতিবেশীরা হাত-পা বাঁধা ও চোখে-মুখে আঠা লাগানো অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসকেরা তাঁর চোখ ও মুখের আঠা অপসারণ করেন। ধর্ষণের আলামত সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি মঙ্গলবার কথা বলতে ও স্বাভাবিক খাবার খেতে পারছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
মঙ্গলবার(১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ওই গৃহবধূ গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, রোববার রাতে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। তারপর আর কিছুই জানি না। এখন দেখছি আমার কান ছেড়া। কানের দুল কারা নিয়ে গেছে। তবে ব্যাগে ৬ হাজার টাকা ছিল, সেই টাকা রয়েছে। গলায় কিছু ছিল না।
ভুক্তভোগী ওই নারীর মেয়ে বলেন, আজ সকাল থেকে মা কথা বলছেন। তবে তিনি কোন কিছু বলতে পারেন না।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ইউনিট-২-এর সহকারী রেজিস্ট্রার চিকিৎসক মো. কনক হোসেন বলেন, ওই রোগী আমাদের কাছে এসেছিলেন একটু অবচেতন অবস্থায় এবং বেশকিছু ইনজুরি নিয়ে। সেগুলোর অবস্থার উন্নতি হয়েছে। গতকালের থেকে আজকে অনেকটাই তিনি সুস্থ্য হয়ে উঠেছেন। সকাল থেকে তিনি স্বাভাবিক কথাবার্তা বলছেন, খাবারও খাচ্ছেন। তার আপাতত বড় ধরনের ঝুঁকি আমরা দেখছি না। তার চোখের পাতা ও দুই ঠোঁট শক্ত সুপার ব্লু আঠা দিয়ে লাগানো ছিল, সেটি আমরা চক্ষু বিভাগের সহায়তায় আঠা সরিয়ে এখন স্বাভাবিক চিকিৎসা চলছে, চোখে দেখতেও তেমন কোন সমস্যা হচ্ছে না। আমরা আশা করি তিনি দ্রুতই সেরে উঠবেন। মুখের আঠাও অপসারণ করা হয়েছে। সে স্বাভাবিক খাবার খাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার বিবরণ জানতে চাইলে রোগী বলেছেন আমি রাতে খেয়ে ঘুমিয়েছি, তারপর কি ঘটনা ঘটেছে আমি জানি না, তেমন কিছু বলতে পারি না। তাকে গাইনী বিভাগে পাঠানো হয়। সেখান তার শারিরীক বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চূড়ান্ত প্রতিবেদন আমরা হাতে পাইনি। চূড়ান্ত প্রতিবেদন আসলে বলা যাবে।
গৃহবধূর স্বামী জানিয়েছিলেন, রোববার দুপুর ৩ টার দিকে সবজির ব্যবসায়িক কাজে বাহিরে যায়। ভোর রাত ৫টার দিকে আমাকে কল দিয়ে ঘটনা জানালে আমি ফিরে আসি।
তিনি জানান, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে একাধিক লোক, আমি বাইরে থাকার সুযোগে আমার বাড়ি প্রবেশ করে। সেখানে আমার স্ত্রীকে গণধর্ষণ ও ডাকাতি করেছে। তার কানে থাকা স্বর্ণের দুল ছিড়ে নিয়ে গেছে। তার চোখে আঠা দেওয়া ছিল আর কান ছেড়া ছিল। আমার স্ত্রী কথা বলতে পারছে না এখন। আমি দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
খুলনা গেজেট/ এএজে