খুলনা, বাংলাদেশ | ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে হামলায় ৩ পুলিশ বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ৭
  ভারতীয় সব বাংলা চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধ চেয়ে করা রিটের শুনানি বুধবার

কচুয়ায় জমিসংক্রান্ত বিরোধে আপন ভাগ্নেকে কুপিয়ে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট

বাগেরহাটের কচুয়ায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পলাশ শেখ (৩৬) নামের এক যুবককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছেন আপন মামা আব্দুর রব, কবির ও তাদের লোকজন। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাতে উপজেলার ফতেপুর বাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

পরে পলাশকে উদ্ধার করে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয় কচুয়া থানা পুলিশ। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিহত পলাশ শেখ কচুয়া উপজেলার চন্দ্রপাড়া গ্রামের আফজাল শেখের ছেলে। তার স্ত্রী, এক মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে।

অভিযুক্ত সাবেক সেনা সদস্য আব্দুর রব চন্দ্রপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও কচুয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি। কবির হোসেন স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। এই সরকার পরিবর্তনের পরে আব্দুর রব ও কবিরের নেতৃত্বে মারধর, বাড়িঘর লুট ও ডাকাতি করা হয়েছে। সম্প্রতি কচুয়া উপজেলা ছাত্রদলের সদ্য সাবেক যুগ্ন আহবায়ক মোহাম্মদ রিয়াজুল ইসলাম (২৭) কে এলাপাথারি কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছেন রব কবিরের লোকজন। তিনি এখন ঢাকায় চিকিৎসাধীন আছে। তবে প্রাণের ভয়ে রব কবিরের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারে না।

নিহতের মা হেলেনা বেগম বলেন, বাবার বাড়িতে পাওয়া প্রায় দেড় বিঘা জমি আমার ভাই বিএনপি নেতা আব্দুর রব ও কবির জাল দলিল করে নিয়েছেন। এই জমি ফেরত চাওয়াকে কেন্দ্র করে ভাইদের সাথে আমাদের পরিবারের বিরোধ ছিল। কিন্তু সরকার পরিবর্তন হওয়ার পরে রব আমার ছেলেকে ডেকে তার সাথে নিয়ে বিভিন্ন অপরাধ করিয়েছে। কয়েকদিন আগে জমি ফেরত চাইলে রব ও কবির আমার ছেলে পলাশকে বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করে। গতকালও আমার ছেলে বাড়িতে ছিল। স্থানীয় শিমুল কয়েকবার ফোন করে, কুমারগাড়িয়া ঘেরের (সরকারি জমিতে দখল করা ঘের) ভাগের টাকা দেওয়ার কথা বলে ডেকে নেয়। বাইরে থেকে আনা ৫ জন লোক এবং স্থানীয় অনেক লোককে দিয়ে রব ও কবির আমার ছেলেকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মেরে ফেলেছে। পরে পুলিশ খবর পেয়ে আমার ছেলেকে নিয়ে আসছে। আমি রব-কবির এবং যারা আমার ছেলেকে মেরেছে তাদের ফাঁসি চাই। আমার ছেলেকে কেউ একটু পানিও দেয়নি বলে বিলাপ করতে থাকেন সন্তান হারা মা।

পলাশের বোন সালাম বেগম বলেন, রব ও কবির এই জমি নিয়ে আগেও আমার ভাই ও মাকে কয়েকবার মেরেছে। গতকাল তারা একদম মেরে ফেলেছে আমার ভাইকে। রব, কবির ও আকবরের নেতৃত্বে আমার ভাইকে মেরে ফেলেছে। তারা ২০ লাখ টাকাও রেখেছে, এই হত্যা মামলা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য।

পলাশের স্ত্রী রিমা বেগম বলেন, আমার তিনটা ছেলে-মেয়ে। আমার বাবা-মা নেই, শ্বশুর-শ্বাশুরীও বৃদ্ধ। একটু জমির জন্য আপন ভাগ্নেকে মেরে ফেলল রব-কবির, আমি এখন কোথায় যাব।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, সরকার পরিবর্তনের রব ও কবির এলাকাকে অশান্ত করে ফেলেছে। এমন কোন অপরাধ নেই তারা করে না। কচুয়ার মানুষের শান্তির জন্য তাদের এখনই থামানোর দাবি জানান তিনি।

কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মনি শংকার পাইক বলেন, গতকাল রাতে মৃত অবস্থায় একজন মারধরের রোগী নিয়ে আসা হয়েছিল। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।

কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ রাশেদুল আলম বলেন, হত্যার কারণ অনুসন্ধানে কাজ শুরু হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!