কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী ৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুই হাজার ঘর পুড়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা। চার ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সাত ইউনিট। তাদের সঙ্গে উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনী ও বিজিবি।
সোমবার (২২ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বালুখালীর ৯ নম্বর ক্যাম্পে এ আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুনে ক্যাম্পের ওই ব্লকটি পুড়ে যায়। সেই সঙ্গে আশপাশের সাতটি ব্লকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে দুই হাজার ঘর পুড়ে গেছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বালুখালী ক্যাম্পে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে আগুন আরও সাত ক্যাম্পে ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে ওই ক্যাম্পের প্রায় সব ঘর পুড়ে গেছে। পাশাপাশি অন্যান্য ক্যাম্পের হাজারের অধিক ঘর পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের পানি শেষ হওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ফলে উদ্ধারকাজে অংশ নেয় সেনাবাহিনী ও বিজিবি।
স্থানীয়রা জানান, ফায়ার সার্ভিসের সাত ইউনিটের পানি শেষ হয়ে গেছে। আগুন নেভানোর জন্য পানি নেই। আগুনের ভয়াবহতা বেড়েই চলছে। এক ব্লক থেকে অন্য ব্লকে ছড়িয়ে পড়ছে আগুন। একের পর এক ঘর পুড়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গারা যে যেভাবে পারছেন, ঘর থেকে জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদে নিয়ে যাচ্ছেন।
আগুনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মামুনুর রশীদ বলনে, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি কাজ করছে। বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুনের সূত্রপাত হলেও আরও সাত ক্যাম্পে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আগুনে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার ঘর পুড়ে গেছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়ে ডিসি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ট্যাংকারের পানি শেষ হয়ে গেছে। এখন সেনাবাহিনীর ট্যাংকার থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে পানি ছিটানো হচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ঘরে ঘরে থাকা গ্যাস সিলিন্ডারের বিস্ফোরণে আগুনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কেউ হতাহত হয়েছেন বলে আমরা খবর পাইনি।
ফায়ার সার্ভিসের উখিয়া স্টেশন, রামু স্টেশন ও কক্সবাজার স্টেশনের সাত ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ক্যাম্প ইনচার্জ মোহাম্মদ তানজীম।
তিনি বলেন, আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এ পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি ঘর পুড়ে গেছে। কতজন হতাহত হয়েছেন, তা আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর জানা যাবে।
কক্সবাজারের ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক আতিকুর রহমান বলেন, আগুন নেভানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। ব্লক থেকে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখনো হতাহতের খবর পাইনি আমরা।
খুলনা গেজেট/কেএম