করোনাভাইরাসের অজুহাতে যশোরের অভয়নগরে ‘ওয়ান টাইম’ প্লাস্টিক চায়ের কাপ ব্যবহার অতি মাত্রায় বেড়ে গেছে। ছড়িয়ে পড়েছে উপজেলাব্যাপী। যত্রতত্র পড়ে থাকছে অপচনশীল এসব কাপে। ঝুঁকি বেড়েছে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের। প্লাস্টিকের এ কাপের ব্যবহার বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছেন পরিবেশবাদীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভয়নগর উপজেলা জুড়ে ছোট-বড় প্রায় ৮ হাজার চায়ের দোকান আছে। এসব দোকানে প্রতিদিন প্রায় এক লাখ কাপ চা বিক্রি হয়। যার ৮০ শতাংশ চা প্লাস্টিকের ‘ওয়ান টাইম’ কাপে দেওয়া হয়। উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে কথা হয় চায়ের দোকানী আব্দুর রহমান, আকবর আলী, কলিম উদ্দিন, আনোয়ার হোসেনের সাথে। তাদের অভিযোগ ক্রেতার চাহিদা ও স্থানীয় পুলিশের চাঁপে এই কাপে চা দিতে বাধ্য হন তারা। ব্যবহারের পর ওই কাপ যত্রতত্র ফেলার বিষয় জানতে চাইলে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যান।
নওয়াপাড়া বাজারের প্লাস্টিক ব্যবসায়ী মঙ্গল কুমার জানান, প্রায় ২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘ওয়ান টাইম’ প্লাস্টিক সামগ্রী বিক্রি করা হয়। প্রতিদিন প্রায় এক লাখ ‘ওয়ান টাইম’ প্লাস্টিকের চায়ের কাপ বিক্রি হয়। প্রকারভেদে প্রতি পিস ৭০ পয়সা থেকে এক টাকা দরে পাইকারী বিক্রি করা হয়।
পরিবেশবাদি সংগঠন বেলার সদস্য কামরুল হাসান জানান, প্লাস্টিক মানবদেহর জন্য যেমন ক্ষতিকার, তেমনি পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি। অবিলম্বে এসব অপচনশীল প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী।
প্লাস্টিকের তৈরি অপচনশীল পণ্যের ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস এম মাহামুদুর রহমান রিজভী বলেন, প্লাস্টিক জাতীয় কাপে চা বা গরম পানি পান করলে হার্ট, কিডনী, লিবার সহ ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি হয়। এসব পণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয় পলিমার নামক ক্ষতিকর কেমিক্যাল। যা মানবদেহে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং পরিবেশের জন্য ভয়াবহ হুমকি হিসেবে দেখা দেয়। অপচনশীল প্লাস্টিকের জন্ম হয় কিন্তু মৃত্যু হয় না। প্লাস্টিকের পরিবর্তে মাটির অথবা কাঁচের তৈরি পণ্য ব্যবহার করা উত্তম।
উপজেলা সহককারী কমিশনার (ভূমি) কেএম রফিকুল ইসলাম জানান, পলি ইথায়লিন ও পলি প্রোপাইলিন বা উহার কোন যৌগ মিশ্রণে তৈরি প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার করা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষন আইন ১৯৯৫ (৬) এর ‘ক’ ধারা লংঘন। এসব পণ্য বিক্রি ও ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে দুই বছরের জেল, দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করা যেতে পারে। প্লাস্টিক ব্যবহার রোধে ব্যাপক জনসচেতনা সৃষ্টি করতে হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হবে। যশোর পরিবশে অধিদপ্তরের ০৪২১৬০৭৭৪ নাম্বারে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন রিসিভ করেনি।
খুলনা গেজেট / এমএম